কেঁদে উঠল 'মৃত' শিশু

কেঁদে উঠল 'মৃত' শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক : জন্মের পরপরই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। দেওয়া হয় মৃত্যুসনদ। ভগ্নহৃদয়ে বাবা ইয়াসিন মোল্লা শিশুটির মৃতদেহ দাফন করতে নিয়ে যান রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে। সেখানে কবর খোঁড়ার একপর্যায়ে 'মৃত' শিশুটি নড়ে ওঠে। একটু পর তার কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়।
প্রথমে ভীষণ চমকে যান ইয়াসিন। তবে সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারেন, শিশুটি বেঁচে আছে। তখন আবারও তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সর্বশেষ জানা যায়, হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। তাকে শঙ্কামুক্ত বলছেন না চিকিৎসক।বিস্ময়কর এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, চিকিৎসকদের অমনোযোগের কারণে জীবিত শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তবে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, অপরিণত অবস্থায় শিশুটির জন্ম হয়েছিল। এরপর ঘণ্টাখানেক পর্যবেক্ষণে রেখেও তার হূৎস্পন্দন পাওয়া যায়নি।এ ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্বজনরা জানান, রাজধানীর তুরাগের ধউর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন বিআরটিসির ড্রাইভিং প্রশিক্ষক ইয়াসিন মোল্লা। গত বুধবার তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রী শাহীনূর আক্তারকে ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করেন। উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা ছিল শাহীনূরের। তাই সেদিন তিনি সন্তান জন্ম দিতে পারেননি। এরপর গতকাল ভোর পৌনে ৫টার দিকে তিনি তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন। তবে নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

ইয়াসিন জানান, শিশুটির 'মৃতদেহ' দাফনের জন্য প্রথমে তিনি আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে দেড় হাজার টাকা ফি চান সংশ্নিষ্টরা। ওই পরিমাণ টাকা সঙ্গে না থাকায় তিনি যান রায়েরবাজারের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। কারণ সেখানে ৫০০ টাকায় দাফন করা যাবে। টাকা দেওয়ার পর কবর খোঁড়াও শুরু হয়। এর মধ্যেই প্যাকেটের ভেতর থাকা শিশুটি নড়ে ওঠে। এরপর সে কাঁদতেও শুরু করে। অবিশ্বাস্য এ ঘটনায় ইয়াসিন তো বটেই, গোরখোদকসহ উপস্থিত অন্যরাও বিস্মিত হন। পরে তারা শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

শিশুটির স্বজনরা জানান, শিশুটিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। তবে আগের মৃত্যুসনদটি চিকিৎসকরা নিয়ে নেন। অবশ্য মোবাইল ফোনে এর ছবি তুলে রেখেছেন তারা।পরে হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বলেন, শিশুটি অপরিণত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হওয়ায় কিছু জটিলতা রয়েছে। তাকে সুস্থ করে তোলার সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

বি আলো / মুন্নী