করোনাকালে শ্বাসকষ্টের রোগীরা যা করবেন

করোনাকালে শ্বাসকষ্টের রোগীরা যা করবেন

ডা. মো. সেরাজুল ইসলাম: বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হাঁপানি, ক্রনিক ব্রংকাইটিস, আইএলডি ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন যারা, তাদের শ্বাসতন্ত্র নাজুক থাকে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে তাই তাদের জটিলতার আশংকা বেশি। এ ধরনের রোগীর তীব্র নিউমোনিয়াই শুধু নয়, আ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিন্ড্রোমও (এআরডিএস) হতে পারে। এআরডিএসে ফুসফুসের  টিস্যু পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। 
শ্বাসকষ্টের রোগীদের এমনিতেই মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়। করোনা মহামারির এই সময় এ সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে উদ্বেগ। কারণ, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা কঠিন যে কী কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হলো। করোনার সংক্রমণ, নাকি শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগ। কাজেই এ সময় শ্বাসকষ্টের রোগীদের কিছু বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। 


* মহামারির সময় জ্বর, জ্বর ভাব, স্বাদহীনতা, শ্বাসকষ্ট, কাশি ইত্যাদি কোনো উপসর্গই অবহেলা করবেন না। দ্রুত করোনার পরীক্ষা করে নিন। এ ছাড়া শ্বাসকষ্টে রোগীদের রক্তের সিবিসি, ফেরিটিন, সিআরপি, বুকের এক্সরে বা সিটি স্ক্যানও করা উচিত। এতে ফুসফুসের অবস্থা বোঝা যাবে। 


* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছুতেই কোনো অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করবেন না। এতে পরবর্তীতে সমস্যা চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে রোগ প্রতিরোধ খাবার খাবেন, ভিটামিন সি জাতীয়, গরম পানির ভাপ, আদা চা ইত্যাদি। 


*এছাড়া নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করুন। তবে করোনার রোগীদের নেবুলাইজার ব্যবাহর করা নিষেধ্ কারণ,  নেবুলাইজার যন্ত্রে অ্যারোসল তৈরি হয়। এতে জীবাণু চারপাশের বাতাসে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। 

* অনেক হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের রোগী স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনে অভ্যস্ত। শ্বাসকষ্ট সামান্য বাড়লেই তারা স্টেরয়েড খেয়ে ফেলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ সময় কিছুতেই এটি করবেন না। কারণ, স্টেরয়েড রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। 


- সিওপিডির অনেক রোগী বাড়িতে অক্সিজেন ব্যবহার করেন। তাদের ক্ষেত্রে লো ডোজ অক্সিজেন ব্যবহারের নিয়ম। শ্বাসকষ্ট হলে হঠাৎ হাই ডোজ অক্সিজেন দেওয়া যাবে না। এতে ক্ষতির আশংকা বেশি। সিওপিডির রোগীদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৮৮ শতাংশ বা তার নিচেও স্বাভাবিক ধরা হয়। তাদেরকে অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে অক্সিজেন দিতে হয়। এটি বাড়িতে সম্ভব না। তাই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চলা উচিত। 


* সিওপিডির প্রধান কারণ হচ্ছে ধূমপান। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপান একেবারে নিষিদ্ধ। 


* দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের করোনা হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত। কারণ, তাদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা ঝুঁকিপূর্ণ। 

 লেখক : ডা. মো. সেরাজুল ইসলাম
সহকারী অধ্যাপক ও আবাসিক চিকিৎসক;
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা।
চেম্বার : লাইফ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার হক টাওয়ার, মহাখালী টিবি গেট, ঢাকা।
০১৫৫৫ ৩৩৩ ১১১, ০১৮৪১ ২২২০৩৩

বিআলো/ইসরাত