বাঘাইছড়িতে সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

বাঘাইছড়িতে সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

পলাশ চাকমা, পার্বত্য অঞ্চল ব্যুরো:  একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। এই এলাকার মাঝখানে কাচালং নদী হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে স্বেচ্ছাশ্রমে নিজ উদ্যোগে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করেন এলাকাবাসী। নড়বড়ে এই কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পারাপার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ঔ কাঠের সাঁকো।  সাঁকো নিয়েই যেন তাদের জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।

স্থানীয় সমরেশ চাকমা জানান, নদী পারাপার হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনের  প্রয়োজনে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই ।  বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জনে যাওয়া  ছাত্রছাত্রীদের নদী পারাপারে  অভিভাবকদের মাঝে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।

তিনি আরো জানান, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান রাঙ্গমাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল সেতুটি নির্মাণ করে দিবেন। আশা করেছিলাম, সেতুটি নিমার্ণের ফলে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী সহ ইউনিয়নবাসী দুর্ভোগ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতির তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো নিমার্ণ হয়নি সেতুটি। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের
সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে। মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যায়ন  শেষে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় উপজেলা সদরের একমাত্র উচ্চ বিদ্যাপীঠ কাচালং সরকারী ডিগ্রী কলেজে । বঙ্গলতলী ইউনিয়ন থেকে  উপজেলা সদর প্রায় ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার দুরত্ত্ব হওয়ায় এবং  উন্নত সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় একমাত্র বাহন মোটরসাইকেল  যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের।  যথাসময়ে কলেজ পৌঁছতে শিক্ষার্থীদের সময়ের ২ ঘন্টা পূর্বে ঘর থেকে বের হতে হয়।

বিষেশ করে, বর্ষা মৌসমে নদী পারাপারে চরম ভোগান্তি ও ঝুঁকির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনসাধারণের। বর্ষা মৌসমে নদীর পানি বেড়ে গিয়ে প্রবাহমান স্রোতধারা পরিবর্তন হয়ে প্রবল গতিতে নদীর পানি প্রবাহিত হতে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপারে অনেকে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত ও মৃত্যু বরণ করেছে বলে জানান স্থানীয় ভুক্তভোগিরা। ব

ঙ্গলতলী ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞানজ্যোতি চাকমা জানান, কাচালং নদী পারাপারে স্থানীয় জনসাধারনকে প্রতিনিয়িত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। নদীর উপর  সেতুটি নির্মাণ হলে উপজেলার সাথে ৮টি ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উম্মেচিত  হবে এবং  অত্র ইউনিয়নের উন্নয়নে সেতুটি যথেষ্ট গুরুত্তপূর্ণ  ভূমিকা রাখবে।

বঙ্গলতলী ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা শিকার করে জানান, সেতু নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। আগামী অর্থ বছরে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান,বঙ্গলতলী নদীতে সেতু নির্মাণ খুবই গুরুত্তপূর্ণ। স্থানীয়দের দুর্ভোগ ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের নদী পারাপারে  অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার কথা শুনেছেন। ওই নদীতে সেতু নির্মাণের  প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রস্তাবনা পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

বিআলো/শিলি