অভিযোগ তুলে নিতে বাদীকে ডেকে এনে হেনস্তা
মো. মনির হোনেন, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের ৪১ নং ওয়ার্ডের পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুবী আক্তারকে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ ও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে অপসারণের দাবিতে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিভাবকদের পক্ষে অভিযোগ দেন ফেরদৌস বেপারি।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়গুলো প্রকাশিত হয়েছে। গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। প্রায় এক মাস ধরে রুবীসহ কয়েকজন অভিযুক্ত বিদ্যালয়ে আসেন না।
আজ (সোমবার) তদন্ত কমিটির আহবায়ক জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার কবির শাহাদাৎ ফোনে ডেকে এনে কড়া ভাষায় ফেরদৌসকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেন। এক পর্যায়ে পরিচয় জানতে চাইলে ফেরদৌসকে মারতে ত্যাড়ে আসেন। তদন্তের ফাইল ছুড়ে ফেলেন। ওই সময় রুবীর স্বামী বাড়িয়া ইউনিয়নের আ.লীগের সহ-সভাপতি জামান ভূইয়া ও সিটির ৪১ নং ওয়ার্ডের আ.লীগের সভাপতি চারবারের বিনা ভোটে নির্বাচিত পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন প্রধান শিক্ষক রুবী আক্তারের উপস্থিতিতে ফেরদৌসকে মারতে ত্যাড়ে আসেন।
তদন্ত কর্মকর্তা জোর গলায় বলতে থাকেন ‘আমি তদন্ত করবো না দেখি কে আমার কী করতে পারে’? ফলে সঠিক তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাদীকে রুম থেকে বের করে দিতে ত্যাড়ে আসার ভিডিও আসে যুগান্তরের হাতে। অন্যদিকে জেল শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান উল্টো ফেরদৌসসহ অভিভাবকদের বিরুদ্ধে নালিশ দিতে ছুটে আসেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। জেলা প্রশাসক বিষয়টি বুঝতে পেরে শাজাহানের অভিযোগ আমলে না নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বলেন ফেরদৌসকে।
জানা যায়, গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান ও প্রোগ্রামার কবির শাহাদাৎ আ.লীগের সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। কথায় কথায় দোহাই দিলেন গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক বিএনপির এমপি ফজলুল হক মিলনের আত্মীয় সুমন নামে এক নেতার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাজাহান জানান, তাদেরকে আমার অফিসে আসতে বলেন। আমি তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো। তদন্ত কর্মকর্তা কবির শাহাদাৎ জানান, আমি তদন্ত করবো না। আমি মারতে ত্যাড়ে আসিনি তাদেরকে আমার রুমে আনতে চাচ্ছিলাম। গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন জানান, অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে এমন বিষয় প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ দিয়ে যান।
বিআলো/তুরাগ