অসহায় ফাতিহার পাসে ভোলা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মুঃ মনিরুল ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মুঃ মনিরুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া শহীদ শাহজাহানের স্ত্রী ফাতিহার পাসে দারিয়েছেন । সম্প্রতি ফাতিহাকে নিয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দেন। এতে তার কলিগদের নজরে পড়ে। পরে মনিরের সঙ্গে আলোচনা করে স্বামী হারা অসহায় ফাতিহাকে তিনি এবং তার কলিগরা মিলে নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় জরুরি ঔষধ ফাতিহার নিকট ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হস্তান্তর করেন।
ভোলা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মুঃ মনিরুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেইসবুকে লিখেন ফাতিহাকে নিয়ে: পুত্র সন্তানের মা হয়েছেন ফাতিহা, কিন্তু মুখে হাসি নেই, কপালে চিন্তার ভাজ। কারন ফাতিহা যখন ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন তার স্বামী শাহজাহান (১৬/৭/২০২৪) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন। ফাতিহার ১ম সন্তান মারা যান, এটি তার ২য় সন্তান। তার স্বামীর গুলিস্তানের ফুটপাতে একটি ভাসমান দোকান ছিল। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকায় থাকতেন, কিন্তু নিয়তির কাছে ফাতিহা হেরে গেলেন। শাহজাহান শহীদ হওয়ার পর ফাতিহার আর স্বামীর বাড়ী যায়গা হলোনা। সে তার মায়ের কাছেই থাকে। পিতা হারা ফাতিহা তার মায়ের কাছেও এখন বোঝা, কারন তার একমাত্র ভাই ঢাকাতে দর্জির কাজ করে কোনমতে সংসার চালান এবং তার মায়ের জন্য মাসে এক হাজার করে টাকা পাঠান। এই এক হাজার টাকা দিয়ে তার মা কিভাবে ফাতিহা ও তার নবজাতকের ব্যয়ভার বহন করবেন? সরকারিভাবে যে অনুদান দেওয়া হয়েছিল তা ফাতিহার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিয়ে গেছে। ফাতিহার ভাষ্যমতে তাকে তারা কোন টাকা-পয়সা দেয়নি এবং এ সন্তানকেও তারা মানতে নারাজ, এমনকি শ্বশুরবাড়ির কোন লোক তাকে দেখতেও আসেনি। নিষ্পাপ সন্তান এবং একবুক আশা নিয়ে ফাতিহা বেচে থাকুক এই কামনায়।
এরপর গতকাল আবার ডাঃ মুঃ মনিরুল ইসলাম তার নিজস্ব ফেইসবুকে লিখেন: ১৫০০০ টাকার টোকেন মানি বিত্তবানদের নিকট হয়তো কিছুই না, কিন্তু ফাতিহার মতো অসহায় নারীদের কাছে অনেক কিছু। তাইতো মুখে মুচকি হাসি। গতকাল ফাতিহাকে নিয়ে সোসাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটি দেখে গলাচিপার কৃতি সন্তান, ইন্জিনিয়ার কাওসার নাইম আমার মেসেঞ্জারে নক করেন এবং আমার বিকাশ নম্বর নেন। তিনি নিজে এবং তার কয়েকজন কলিগ আমার বিকাশে ১৪ হাজার টাকা পাঠান। তার সাথে ১ হাজার টাকা যোগ করে ১৫ হাজার টাকার টোকেন মানি এবং তার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধ ফাতিহার নিকট আজ সন্ধ্যায় হস্তান্তর করলাম। ধন্যবাদ ইন্জিনিয়ার কাওসার, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। কৃতজ্ঞতায়- সিভিল সার্জন, ভোলা।