আদালতের রায় থাকলেও জবরদখলের শিকার অসহায় বিধবা হাছিনা
আদালতের আদেশ অমান্য করে ইউপি চেয়ারম্যানের হুকুমে বিধবা হাছিনা বাড়ি ছাড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনার ফরিদপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল রানার নির্দেশে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিজের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অসহায় বিধবা হাছিনা খাতুন। হামলার পর থেকে তিনি স্বাভাবিকভাবে ঘরে ঘুমাতে পারছেন না।
গত ১৯ নভেম্বর পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার ডেমরা ইউনিয়নের কালিয়ানী গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়ানী গ্রামের সাবেক গ্রাম্য চৌকিদার মৃত বাহাদুর মোল্লার স্ত্রী হাছিনা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে রুকনাই নদীর পাড়ে দুই শতাংশ জায়গায় নির্মিত একটি জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে চার সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। পরবর্তীতে ঝুপড়ি ঘরটি নদীতে ভেঙে গেলে তিনি চরম বিপাকে পড়েন।
পরে তার স্বামীর পূর্বপুরুষের অর্পিত সম্পত্তি ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন’ অনুযায়ী (ক) গেজেটে তালিকাভুক্ত হয়। হাছিনা খাতুন ফরিদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে ১৪৩০-৩১ সনের খাজনা পরিশোধ করে চেকের মাধ্যমে ওই জমি লিজ নেন এবং সেখানে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন।
অভিযোগ রয়েছে, সেই বাড়িতে রাতের আঁধারে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী আবু শামা প্রামাণিক ও তার ছেলেরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে তারা ডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী জুয়েল রানার সহযোগিতায় প্রতিপক্ষ সরোয়ার ওরফে ছোট গ্যাদার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা গ্রহণ করে জোরপূর্বক বাড়ি দখলের নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ করেন হাছিনা।
বাড়ি ভাঙার নির্দেশের বিষয়ে চেয়ারম্যান জুয়েল রানাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরোয়ার ওরফে ছোট গ্যাদাকে ছয় শতাংশ জায়গা জবরদখলের নির্দেশ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। সরোয়ারের কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান জানান, “তার কাগজ না থাকলেও বাড়ি সে দখল করবে—এতে কেউ কিছু করতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে চলমান মামলায় পাবনার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট-১ নং আদালত হাছিনা খাতুনের পক্ষে আদেশ দিয়েছেন। তবুও আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় স্থানীয় জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিআলো/ইমরান



