আবু সাঈদ হত্যা মামলায় উপাচার্যসহ ৭ জনকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ
বিআলো ডেস্ক: রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশিদ ও প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোহাম্মদ নুরুন্নবীসহ সাতজনের নাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলায় নতুন করে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ৯ অক্টোবর আবু সাঈদ হত্যা মামলার বাদী রমজান আলী আদালতে আরো সাতজনকে তার পূর্বের করা মামলায় নথিভুক্ত করতে আবেদন করেন। ২০ অক্টোবর শুনানি শেষে ২৪ অক্টোবর এই আদেশ দেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পরিদর্শক পৃথিস রায়।
একাধিক গোপন সূত্রে জানা যায়, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং আবু সাঈদের বাড়ি একই থানা পীরগঞ্জে অবস্থিত। এই পারিবারিক ও আঞ্চলিক সম্পর্কের ভিত্তিতে শরিফুল ইসলাম আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের মামলায় তার নিজের নাম যাতে কোনোভাবে যুক্ত না হয়, সে জন্য তিনি সক্রিয় প্রচেষ্টা চালান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শরিফুল ইসলাম আবু সাঈদের বাড়িতে তৎপরতা চালিয়েছিলেন এবং বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে। পরবর্তী সময়ে তার নাম কোনোভাবে যুক্ত করা হয়নি।
এ ছাড়া বাকি চারজন হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সুরতহাল প্রস্তুতকারী এসআই তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শাহ নূর আলম পাটোয়ারী এবং সুরতহাল রিপোর্টে প্রতিস্বাক্ষরকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামীম মাহফুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার রায়, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, সাবেক পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, আল ইমরান হোসেন, তাজহাট থানার সাবেক ওসি রবিউল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, সহকারী এএসআই আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৩০-১৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।
ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই সৈয়দ আমির আলী এবং কনস্টেবল সুজনচন্দ্রকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এখন তারা কারাগারে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বন্ধু আবু সাঈদের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অতিদ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্কযুক্ত কোনো টিচার, কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে না থাকে।’
এই বিষয়ে জানতে আবু সাঈদ ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
বিআলো/শিলি