• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    কয়রায় অনলাইন জুয়ার ছোবল: নিঃস্ব হাজারো পরিবার, কোটিপতি এজেন্টরা 

     dailybangla 
    26th Jun 2025 11:21 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মুশফিকুর রহমান, কয়রা (খুলনা): খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় অনলাইন জুয়ার বিস্তার দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মোবাইল ফোন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট সংযোগের সুযোগে ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে এই সর্বনাশা আসক্তি। ছাত্র, শিক্ষক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, দিনমজুর, এমনকি রিকশা ও ভ্যানচালকরাও জড়িয়ে পড়ছেন এই ফাঁদে। বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। দেখা দিচ্ছে পারিবারিক অশান্তি, মানসিক অবসাদ, এমনকি আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতা।

    নিঃস্ব খেলোয়াড়, কোটিপতি এজেন্ট

    অনলাইন জুয়ার মূল হাতিয়ার—ক্রিকেট বেটিং, ক্যাসিনো গেম, কার্ড খেলা প্রভৃতি। একবার জড়ালে বের হওয়া কঠিন। এই আসক্তির ফাঁদে পড়ে অনেকেই সর্বস্ব হারাচ্ছেন। অথচ অন্যদিকে, কিছু অসাধু এজেন্ট কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। স্থানীয়ভাবে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

    মহারাজপুরের বাসিন্দা এক ভ্যানচালক বলেন, “প্রথমে ২০০ টাকা দিয়ে শুরু করি, এখন লাখ টাকা ঋণে ডুবে আছি।”
    কয়রা সদরের কলেজ ছাত্র সোহেল (ছদ্মনাম) জানান, “বন্ধুদের সঙ্গে শুরু করেছিলাম মজা করে, এখন জীবনটাই তছনছ হয়ে গেছে।”

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেক গ্রামে নির্দিষ্ট এজেন্টরা কমিশনের ভিত্তিতে নতুন খেলোয়াড় সংগ্রহ করে। মোবাইল ফিনান্সিং সার্ভিস—বিকাশ, নগদ ও রকেট—ব্যবহার করেই চলছে তাদের লেনদেন।

    আত্মহত্যার চেষ্টাও হচ্ছে

    সম্প্রতি কয়রার এক গ্রামে এক যুবক অনলাইন জুয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের অনুরোধে তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।

    একজন মসজিদের ইমাম বলেন, “প্রতিদিন কেউ না কেউ আসে, চোখে পানি। ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে, ধার-দেনা করে সর্বস্ব হারাচ্ছে মানুষ। এটা এখন সমাজের জন্য হুমকি।”

    প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

    এমন বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অনেকেই মনে করছেন, প্রশাসনের নীরবতাই এ চক্রকে বাড়তে দিচ্ছে।
    একজন ব্যবসায়ী জানান, “সবাই জানে কারা কারা এজেন্ট, কিন্তু কেউ কিছু করছে না। তারা ফকির থেকে কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সমগ্র দেশকেই এর খেসারত দিতে হবে।”

    ভুক্তভোগীদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথমে নানা লোভনীয় অফার দিয়ে আকৃষ্ট করা হয়, এরপর শুরু হয় সর্বস্ব হারানোর দুঃস্বপ্ন। কেউ জমি বিক্রি করছে, কেউ ঋণে ডুবে যাচ্ছে, কেউবা আত্মহত্যার কথা ভাবছে।

    একজন ভুক্তভোগী বলেন, “শুরুটা ছিল মজার জন্য, এখন নেশা হয়ে গেছে। ২০ লাখ টাকা ঋণে ডুবে আছি, সংসার ভেঙে গেছে, সমাজে মুখ দেখানো দায়।”

    প্রশাসনের বক্তব্য

    কয়রা থানার এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি অনলাইন জুয়া রোধ করতে। তবে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে এই চক্র ধরা কঠিন হয়ে পড়ছে।”

    জরুরি উদ্যোগের আহ্বান

    সচেতন মহল মনে করছেন, এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে কয়রায় অনলাইন জুয়ার বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষক ও ধর্মীয় নেতাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930