কয়রায় জলবায়ু ঝুঁকিতে স্থানান্তরিত মানুষের সুরক্ষা জোরদারের কর্মশালা
মুশফিকুর রহমান,কয়রা: বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা কয়রায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও স্থানান্তরিত মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা জোরদারের উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে কারিতাস খুলনা অঞ্চলের আয়োজনে এই মিডিয়া অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল বাকী।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও জলবায়ু-ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অংশ নেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান, কয়রা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ হারুন অর রশিদ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি মোস্তফা শফিকুল।
সভায় বক্তারা বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও বন্যার বৃদ্ধি কয়রার দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা ও আয়ের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বক্তারা জানান, এই পরিস্থিতিতে অভিযোজন-স্থানান্তরিত মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও বিস্তৃত ও কার্যকর করা জরুরি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুয়েটের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, জলবায়ুজনিত দুর্যোগ কেবল সম্পদের ক্ষতি করছে না, বরং মানুষের দীর্ঘমেয়াদি জীবিকা, স্বাস্থ্য এবং নিরাপদ বসতি নির্মাণের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলছে। তিনি তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, শিল্পখাতে নির্গমন নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
আলোচনায় অংশ নেওয়া বক্তারা খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির স্থায়িত্ব, নিরাপদ আবাসন, বিদ্যুৎ সুবিধা, পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বিকল্প আয়মুখী কর্মসংস্থান এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়কে জরুরি হিসেবে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, অভিযোজন-স্থানান্তরিত পরিবারগুলোর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করলে দুর্যোগ-ঝুঁকি কমবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের টেকসই জীবনমান গঠনে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন। তাদের অভিমত, উপকূলীয় মানুষের ভবিষ্যৎ রক্ষায় এসব উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।
বিআলো/ইমরান



