কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না ১৬ পরীক্ষার্থীর
সজীব আলম, লালমনিরহাট: কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলায় চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারল না ১৬ পরীক্ষার্থী। শিক্ষকদের অবহেলা ও ত্রুটির কারণেই এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।
ভুক্তভোগীরা সকলেই লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চরবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া সূর্যমুখী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও রবিবার চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে ওই ১৬ পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় তাদের অভিভাবকরাও হতাশাগ্রস্ত।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ২০০৯ সালে শিয়ালখোওয়া সূর্যমুখী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু। কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়ে আসছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে যথাসময়ে প্রতিষ্ঠানটির এইচএসসি প্রথম বর্ষের ১৬ জন পরীক্ষার্থী তাদের ফরম পূরণ করেন।
পরে পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কলেজে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান। এমন আশ্বাসে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশপত্রের অপেক্ষায় থাকলেও তারা কেউই প্রবেশপত্র পাননি। ফলে ফরম পূরণ করেও প্রবেশপত্র না থাকায় তারা কেউই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরে পরীক্ষা দিতে না পেরে হতাশা নিয়ে ফিরে গেছেন ওই ১৬ পরীক্ষার্থী।
প্রতিষ্ঠানটির পরীক্ষার্থী বিপুল চন্দ্র ও আবু হাসান লিমন জানান, পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কলেজে দিয়ে যথাসময়ে ও যথানিয়মে ফরম পূরণ করেন প্রথম বর্ষের ১৬ পরীক্ষার্থী। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল কেন্দ্রেই প্রবেশপত্র পৌঁছে দেয়া হবে। সেই আশায় কেন্দ্রে গিয়েও পরীক্ষা দিতে পারেননি তারা। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেল শিক্ষাজীবনের একটি বছর। তারা এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেন।
পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বাবুল হোসেন জানান, সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে এমন শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া উচিত। তাদের অবহেলায় আজ ১৬ জন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ পিছিয়ে গেছে। তিনিও ন্যায়বিচার দাবি করেন। শিয়ালখোওয়া সূর্যমুখী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষক সুকুমার বলেন, ১৬ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা হয়েছিল। অনলাইন জটিলতায় তাদের প্রবেশপত্র পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ঢাকায় কয়েক দফা গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
তবে ওই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু সাংবাদিকদের জানান, যে ১৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তারা অন্য প্রতিষ্ঠানেও (জেনারেল) ভর্তি আছেন। এজন্য তাদের এমন সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিআলো/তুরাগ