• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    কাপাসিয়ায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য 

     dailybangla 
    26th Nov 2025 5:01 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মো. মনির হোসেন, গাজীপুর: গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামে বিশাল বিশাল মাটির তৈরি বিশেষ চুল্লিতে অবাধে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করছে একটি অসাধু চক্র। এসব অবৈধ চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণের সঙ্গে দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

    স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় আশপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের বনজ ও ফলজ গাছ কেটে এসব অবৈধ চুল্লিতে দেদারসে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ এবং তা থেকে তৈরি হচ্ছে কয়লা। এসব অবৈধ চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও দূষণের সঙ্গে দেখা দিচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এর ফলে চরম হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নানা ফল ও ফসল, কমে যাচ্ছে কৃষি জমির মাটির উর্বরতা।

    স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন সময় এদের জরিমানা ও উচ্ছেদ করলেও কিছুদিন পর আবার শুরু করে একই কাজ।

    সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় জহিরুল ইসলামের প্রায় এক বিঘা জমির প্রত্যন্ত জঙ্গলে আটটি চুল্লি বানিয়ে দিনরাত কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। তার কাছ থেকে মাসেক চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলার বরমী এলাকার কয়লা ব্যবসায়ী আবুল হোসেন (৪৭)।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, তাদের এলাকায় আগেও এ ধরনের চুল্লি বসিয়ে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করতেন ব্যবসায়ীরা। পরে প্রশাসনের অভিযানে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও চুল্লি বসিয়ে কাঠ পোড়াচ্ছে কয়লা ব্যবসায়ীরা। তবে তাদের সাথে যুক্ত স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।

    চুল্লিতে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাটি ইট ও কাঠের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশাল বড় আকারে সব চুল্লি। চুলির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজে একটি মুখ খোলা রেখে অন্য মুখ গুলো মাটি এবং ইট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেয়া হয় চুল্লিতে। আগুন দেওয়া শেষে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুলায় ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয় কয়লা তৈরি করতে। তিনি আরো জানান, সেই কয়লা ঠান্ডা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হয়।

    এ ব্যাপারে কথা হয়, এ চুল্লিতে কাঠ সরবরাহকারী ও মালিকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে অভিযুক্ত মো: কাজলের সঙ্গে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, এইসব কয়লা তৈরির চুলার জন্য কিসের অনুমতি নিতে হয় তা আমার জানা নেই। আমার জানা মতে,এই চুলায় পরিবেশের কোন ক্ষতি সাধন হচ্ছে না এবং জনসাস্থ্যের জন্য হুমকিও না। যদি পরিবেশের ক্ষতি হতো তাহলে মানুষ এসব ব্যবসা করতো না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনার (সাংবাদিকদের) এলাকার কোন ক্ষতি হচ্ছে কিনা সেটা বলেন। এখানে কাঠ সরবরাহ করে কয়েকটি পরিবারের রুটি রুজির ব্যবস্থা হয়েছে। অন্য কোন ক্ষতি হয়নি।

    স্থানীয় নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্র বলেন, দুপুরের সময় এবং রাতে আমরা ঠিকমতো শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারিনা। এই ধোঁয়ার কারণে তীব্র গলা ব্যথা হয়। এছাড়াও নাক-মুখ বন্ধ হয়ে আসে। আমরা চাই তাড়াতাড়ি যেন এই চুলাগুলো বন্ধ হয়।

    এ বিষয়ে কথা হয়, স্থানীয় রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথমদিকে জানতাম না যে এই ধোঁয়ায় বা এই চুল্লিতে পরিবেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু এখন তাহারে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আমি চাই এই চুল্লি দ্রুতই বন্ধ হোক।

    এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না তাসনিম বলেন, এ বিষয়ে আগে জানা ছিলো না। যেহেতু জেনেছি, আমি সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক এ বিষয়ে যা ব্যবস্থা নেয়ার নিবো।

    গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল জানান, এসব অবৈধ কয়লা তৈরীর চুল্লি পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। অচিরেই অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ চুল্লি বন্ধ করে দেয়া হবে।

    বিআলো/ইমরান

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930