গাজীপুরে যুগান্তর স্বজন সাংগঠনিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
মো. মনির হোসেন, গাজীপুরঃ দৈনিক যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ সরকার রাকিবের নামে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্বজনরা। রবিবার সকালে যুগান্তর স্বজন সমাবেশের পূবাইল শাখা অফিসের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে এতে অংশগ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরাও।
জানা যায়, পূবাইলের মিরের বাজার চৌরাস্তায় ২০১২ সালে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে এলোপাতাড়ি গুলিতে কয়েকজন গুরুতর আহতের ঘটনায় চলতি মাসের ৩ সেপ্টেম্বর পূবাইল থানায় একটি মামলা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ওই মামলায় সংশ্লিষ্ট অনেককেই বাদ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে নিরপরাধ অনেকের নাম এসেছে। যাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই। এমনকি ওই ঘটনার সময় এলাকায় ছিলেন না তাদেরকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার তালিকায় নাম দিতে ও নাম কাটাতে লেনদেন হয়েছে মোটা অংকের টাকা। এমন ঘটনার বলি হয়েছেন স্বজনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ সরকার। তার নাম মামলায় তালিকাভুক্ত করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পূবাইল থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন জানান, নামের তালিকা আমি দেইনি। আমি সাহেদ সরকারকে চিনি না। পূবাইল থানা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা নাম দিয়েছেন। আমি শুধু বাদী হয়েছি। পূবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন বকুল বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। নিরপরাধ সাহেদ হয়রানির শিকার হবেন না। মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, পূবাইল যুগান্তর স্বজন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দেশব্যাপী দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে আসছে সংগঠনটি। মানুষের মনে একটি আস্থার জায়গা হিসেবে পরিণত হয়েছে অরাজনৈতিক এ সংগঠনটি। তারই অংশ হিসেবে ১১ বছর ধরে দেশের এবং মানুষের দুঃসময়ে কাজ করে যাচ্ছেন পূবাইলের স্বজনরা।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ আগস্ট পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি করেন। এতে বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী স্বজনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদ সরকার রাকিব সংহতি জানান। শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেয়ায় এরপর থেকে টাকাসহ বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে স্বজন সদস্যকে। সকলভাবে ব্যর্থ হয়ে এতদিন লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করা প্রধান শিক্ষক তার পদ বহাল রাখতে কৌশলে আশ্রয় নেন বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর কাছে। এরপর পূবাইল থানার কয়েকজন শীর্ষ নেতা স্বজন সদস্যকে ফোন করে স্কুলের বিষয় থেকে সরে যেতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন তারা। ফলে ৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষ থেকে পূবাইলের বিন্দান এলাকার আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে পূবাইল থানায় রাজনৈতিক মামলা দায়ের করেন। এতে ৫১ নম্বর আসামি করেন স্বজন সদস্য সাহেদ সরকার রাকিবকে। যিনি একজন চাকরিজীবী ও সমাজসেবক। যিনি কিনা কখনোই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। পূবাইল স্বজনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে মামলায় স্বজন সদস্যের নাম জড়ানোদের বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
যুগান্তর স্বজন সমাবেশের মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্বজন সভাপতি মামুন মিয়া, প্রচার সম্পাদক ফেরদৌস বেপারি, কামাল হোসেন, সাহেদ সরকার, কামরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, হাসান, লিওয়ন সরকার প্রমুখ। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পূবাইল থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, সাহেদ সরকারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার নাম তদন্ত করে বাদ দেয়া হবে।
বিআলো/তুরাগ