চরভদ্রাসনে মামলা ও প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
dailybangla
19th Aug 2024 4:29 pm | অনলাইন সংস্করণ
সেতু আক্তার , ফরিদপুর: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ইউসুফ বেপারী (৪৬) নামে এক ব্যক্তির হাত থেকে হয়রানি মামলা, সালিশ বাণিজ্য ও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। তাঁর হাত থেকে বাঁচতে মানববন্ধন শেষে গণস্বাক্ষর দেন এলাকাবাসী। এতে অর্ধশত গ্রামবাসী স্বাক্ষর করেন। রোববার দুপুর ১২ টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের গাজিরটেক মোড় এলাকায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ভূক্তভোগীরাসহ গ্রামবাসী অংশগ্রহণ করেন।
ইউসুফ বেপারী ওই গ্রামের মৃত ছমির বেপারীর ছেলে। মানববন্ধনে গ্রামবাসীরা বলেন, ইউসুফ বেপারী মানুষকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে থাকেন। এমনকি নিজ স্ত্রী ও দুই মেয়েকে দিয়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলাসহ কখনো বা কখনো সালিসশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকেন। এছাড়া তিনি জমি বিক্রির নামে ফাঁদ পেতে প্রতারণা ও সালিশ বাণিজ্য করে হাতিয়ে নেয় প্রচুর অর্থ । তার এমন আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেও স্ত্রী ও দুই মেয়েকে দিয়ে নারী নির্যাতন সহ ধর্ষণের মামলা দিয়ে থাকেন বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেন।
মানববন্ধনে ওই গ্রামের সফি বেপারীর স্ত্রী তোছি বেগম জানান, তাঁর ছেলে জাহেদ ব্যাপারীর নামে নারী নির্যাতনের অভিযোগ করে সালিশের মাধ্যমে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউসুফ বেপারী। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের বিরুদ্ধে ওর (ইউসুফ) স্ত্রীকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা করে। সে সময় এলাকাবাসী মিটিয়ে দেয়ার কথা বললে তা মানা হয়নি পরে থানায় গিয়ে সালিশ করে অনেক টাকা দাবি করে। পরে হাত-পা ধরে ১৪ হাজার টাকা দিই।
লোকমান মন্ডল নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের নামে আদালতে তাঁর স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণের একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। পরে আমরা আদালতের মাধ্যমে মামলা থেকে রেহাই পাই। এভাবেই গ্রামের অনেক মানুষের নামে হয়রানী মূলক মামলা দেওয়া তার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আমরা তার হাত থেকে বাঁচতে চাই এবং আইনের মাধ্যমে এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এই ইউসুফ বেপারীর নিকট থেকে জমি ক্রয় করে তা আজও দখল পায়নি বলে অভিযোগ করেন লালন ফকির নামে একলোক। এছাড়া আরও অনেকে জমি ক্রয় করে হয়রানির শিকার হয়েছেন। প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের ভাগ্যে মিলেছে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা। এসব মামলায় ভিকটিম দেখানো হয় তার স্ত্রী এবং সন্তানদের। এমনই অভিযোগ তুলে ধরেন ওই গ্রামের আজম বেপারী নামে এক বাসিন্দা। তিনি গ্রামবাসীকে তার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের কাছে বিচারের দাবি জানান।
হাচান ফকির নামে আরও এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, আমার সাথে কবুতর নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে। পরে থানায় গিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা করে। পরে আমার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বিক্রি করে তা মিমাংসা করি। সে এভাবে ছোটখাটো সমস্যা নিয়েই বড় ধরনের মামলা বা সালিশ করে টাকা হাতিয়ে নেয়। গাজিরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াকুব বেপারী বলেন, আমার কাছে কয়েকটি সালিশ নিয়ে এসেছিল। এছাড়া শুনেছি এই লোক মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে ইউসুফ বেপারীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষজন আপনারে যা বলছে, আপনার যা মন চায় তাই করেন’- এ কথা বলেই লাইন কেটে দেন তিনি।