• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ
    • যোগাযোগ
    • অভিযোগ
    • ই-পেপার

    ছাত্র-জনতার রক্তে পাওয়া নতুন বাংলাদেশ 

     dailybangla 
    05th Aug 2024 11:25 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ইবনে ফরহাদ তুরাগঃ স্বাধীনতার মাত্র ৫৩ বছরে পরাধীনতার গ্লানি ভুলে গেলাম আমরা। ১৯৭১ এর পর, ২০২৪ সালে আরেকটি স্বাধীনতার স্বাদ পেল বাঙালি। টানা ৩৬ দিন আন্দোলন-সংগ্রাম ও হাজার হাজার ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হলো এবারের স্বাধীনতা। ৫ আগস্ট সাড়ে পনেরো বছরের স্বৈর-শাসনের অবসান ঘটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে অর্জিত হলো নতুন বাংলাদেশ।

    গত ১৫ বছর বড় বড় শক্তিধর রাজনৈতিক দল চেষ্টা করেও যা করতে সক্ষম হয়নি, সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে এবারের ছাত্র-জনতা। এতে মুখ্য ভুমিকায় ছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক ও জেনারেশন-জেড। আর সেই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার হৃদয়ে জ্বলন্ত অগ্নিশিখার মতো কাজ করেছে আবু সাইদের মৃত্যু।

    ঘটনার সূত্রপাত, ২০১৮ সালে করা ‘সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন’ গত ৫ জুন হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্রসমাজের অসন্তোষের শুরু হয়। অন্যদিকে তৎকালীন সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিলেও কৌশলে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফেরত আনার চেষ্টা করছে অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা সরব হন। এ সুবাদে গত ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। সাথে যোগ দেন জেনারেশন-জেড ও দেশের অধিকাংশ ছাত্র-জনতা অবশেষে সেই আন্দোলন গিয়ে গড়ায় গন-অভ্যুত্থানে।

    গত ১৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যা দেন বলে দাবি করা হয়। এতে ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্লোগান ওঠে, ‘তুমি কে, আমি কে– রাজাকার, রাজাকার; কে বলেছে, কে বলেছে– স্বৈরাচার স্বৈরাচার’। এ স্লোগানের জবাব দিতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত– পরের দিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা বলার এক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়। ছাত্রলীগের বহিরাগত নেতাকর্মী ছাত্রীদের মেরে রক্তাক্ত করে। এতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

    গত ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বুক পেতে দাঁড়ালে, নিরস্ত্র এ তরুণকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। ১৮ থেকে ২১ জুলাই নারকীয় বর্বরতা চলে বিক্ষোভকারীর ওপর। অনুসন্ধানে জানা যায়, গণমাধ্যমের হিসাবে এ চার দিনে ২১২ জনকে হত্যা করা হয়, যাদের অন্তত ১৯১ জন ছিলেন গুলিবিদ্ধ। এতে প্রাণ হারান আবু সাঈদের পথে অনুপ্রাণিত অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পথে নামা শত সাধারণ মানুষ নিহত হন। হাজার হাজার মানুষ গুলিবিদ্ধ হন।

    সে সময়ে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলার জন্য সরকার বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেয়। ২১ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ও বাতিল করে। তবে ততদিনে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার হন গ্রেপ্তার-হয়রানির বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনার ক্ষমা প্রার্থনা, দুই মন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দাবি তোলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এতে রাজি না হলে (৩ তারিখ) শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকার পতনের “এক দফা ঘোষণা করে”। এ ঘোষণার দু’দিনের মাথায় পতন হয় শেখ হাসিনার। এই অভ্যুত্থানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ৩য় বারের মতো অবিস্মরণীয় এক জয়ের দেখা পায় ছাত্র-জনতা।

    ৫ই আগষ্টঃ গত, ৪ই আগষ্ট (রোববার) এই দিনটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তঝরা দিন। সেদিন শতাধিক প্রাণ ঝরলেও ৫ আগষ্ট সকালে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে লাখো ছাত্র-জনতা রাজধানীর প্রবেশপথে অবস্থা নেন। শেষ সময়েও বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে শেখ হাসিনা সরকার। ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান আগের রাতেই হুঁশিয়ার দিয়েছিলেন, কারফিউ ভেঙে জমায়েত হলে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হবে। কিন্তু আগের দিনগুলোর মতোই হুমকিতে না দমে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমায়েত হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। সাড়ে ১১টার দিকে গুলি করে জমায়েত ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। একই সময়ে উত্তরা, মোহাম্মদপুর, রামপুরা, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনকারীদের বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়। এতে অনেকেই নিহত হন।

    সেনাবাহিনী একই সময়ে দায়িত্বে থাকলেও আন্দোলনকারীদের দমন করেনি। তবে দুপুর ১২টার দিকে সেনাসদস্যরা সড়ক থেকে সরে যেতে শুরু করেন। হঠাৎ পুলিশও সরে যেতে থাকে। সেই সময়ে আইএসপিআরের বরাতে গণমাধ্যমে খবর হয়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দুপুর ২টায় জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। সেই সময় পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানানো হয়। এ খবরে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়, প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা আর থাকতে পারছেন না। কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে উড়াল দেন শেখ হাসিনা। এর আগেই দেশজুড়ে কোটি মানুষ পথে নেমে বিজয় উল্লাসে মাতেন; নেন গণভবনের দখল। অবশেষে যবনিকা ঘটে সাড়ে ১৫ বছরের একচ্ছত্র শাসনের। গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে অবশেষে সৃষ্টি হয় নতুন বাংলাদেশের।

    প্রসঙ্গত, এ দেশের মানুষ এ যাবতকালে তিনটি অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছে। আইয়ুব খার বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারির গণঅভ্যুত্থান, এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বরের গণঅভ্যুত্থান। এরপর দীর্ঘ ৩৪ বছর পর দেখল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান। ইতিপূর্বের দু’টি অভ্যুত্থানের চেয়ে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান ছিল অনেক বেশি ভয়াবহ, লোমহর্ষক ও রক্তাক্ত। আইয়ুব খান ও এরশাদ দেশ ছেড়ে পালাননি, কিন্তু হাসিনাকে মাত্র ৪৫ মিনেটের নোটিশে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। ইতিপূর্বের অভ্যুত্থানে এতটা রক্তপাত হয়নি, যতটা না হয়েছে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে।

    বিআলো/নিউজ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    June 2025
    M T W T F S S
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    30