জনপ্রশাসন পুলিশ বিচার বিভাগ দলীয় প্রভাবমুক্ত চাই: সুজন
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে হবে। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিসহ সংস্কার কমিশনের কাছে জন-আকাঙ্ক্ষাভিত্তিক সুপারিশমালা প্রণয়নের দাবি জানাই। এতে নির্দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন, সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষভোটে জেলা পরিষদ নির্বাচন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত, রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটানো, বিরোধীদের দমনপীড়নের সংস্কৃতির অবসান ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
শনিবার সকালে নগরের চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সুজন চট্টগ্রাম বিভাগীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক সিকান্দার খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আখতার কবীর চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থা প্রায় ধ্বংসের মুখোমুখি উল্লেখ করে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন, নিয়োগ আইনে কমিটিতে সরকারি ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ, ‘না’ ভোটের বিধান চালু এবং নারী নির্যাতন ও নিপীড়নে বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ বিধিমালার সংশোধন করতে হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণমুক্ত করা, কোনো দলীয় কর্মসূচিতে সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের জন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে মাজদার হোসেন মামলার রায়ের যথাযথ বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করেন।
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বলেন, স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণসহ দুটি বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দৃষ্টি রাখতে হবে। কেননা আমাদের সাংবিধানিক আকাঙ্ক্ষার আলোকে ১১, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আইন প্রণয়নের প্রত্যাশা থাকলেও তা অদ্যাবধি হয়ে ওঠেনি। বাস্তবায়ন করা যায়নি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণের চেতনা। অথচ স্থানীয় সরকারের কর্মকাণ্ডে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচনগুলো নির্দলীয় ভিত্তিতে সংসদীয় পদ্ধতিতে আয়োজন, জেলা পরিষদ নির্বাচন মৌলিক গণতন্ত্রের আদলে না করে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে আয়োজন, ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ এবং ক্ষমতা, দায়িত্ব ও সম্পদে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা ইত্যাদি এখন সময়ের দাবি। এ সকল দাবি পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, আমরা যত ধরনের সংস্কারের পথেই হাটি না কেন, যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো পরিবর্তন না আনতে পারি, তবে কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। তাই সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী করতে হবে। আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ রাষ্ট্র-সংস্কারের বিষয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হবে।
বিআলো/তুরাগ