জুলাই-আগস্ট গণহত্যার তথ্য সংগ্রহ করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি
বিআলো প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করতে বিভিন্ন পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
১৯ অক্টোবর, শনিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর মাজহারুল হক পিপিএম স্বাক্ষরিত এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলসমূহ, সহযোগী সংগঠন, অনুগত বা নিযুক্ত অবৈধ অস্ত্রধারী, অপরাধী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর জখম, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ এবং অন্যান্য অপরাধ সংঘটন সংক্রান্তে কারো কাছে কোনো তথ্য, ডকুমেন্ট, ছবি, অডিও/ভিডিও ক্লিপ ইত্যাদি থাকলে তা উক্ত অপরাধ প্রমাণের জন্য ব্যবহার করার লক্ষ্যে তদন্ত সংস্থা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এ সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে বলেও গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ছাত্ররা যে আন্দোলন শুরু করে তা তীব্রতা পায় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে রংপুরের আবু সাঈদসহ সারাদেশে ছয়জন নিহত হওয়ার পর আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সরকার পতনের এই আন্দোলনে সারাদেশে দেড় হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন কয়েক হাজার।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত ট্রাইব্যুনালে পরিবর্তন আনা হয়। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়।
ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। গত ১৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারকাজ শুরু হয়। বিচারকাজ শুরুর দিনে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনাসহ পলাতক অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
বিআলো/শিলি