• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    টাঙ্গাইলে বেহুলা-লক্ষিন্দরের কাহিনী অবলম্বনে যমুনায় দিনব্যাপী শাওনে ডালা অনুষ্ঠিত 

     dailybangla 
    18th Aug 2025 5:01 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নূর নবী (রবিন), টাঙ্গাইল উত্তর: টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে চাঁদ সওদাগর ও বেহুলা-লক্ষিন্দরের কাহিনী অবলম্বনে দিনব্যাপী শাওনে ডালা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ব্রতী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গ্রামীণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সাধনার সার্বিক আয়োজনে রোববার নলিন বাজার ঘাট থেকে একটি বিশাল ট্রলার সাজিয়ে শোভাযাত্রা শুরু হয়।

    ট্রলারটি যমুনা নদীতে মেলার রূপ নেয়। সেখানে ছিল মাটির খেলনা, চা-স্টল, খাবারের দোকানসহ বেহুলা-লক্ষিন্দরের যাত্রাপালা। গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই দৃশ্য উপভোগ করতে নদীর দুই তীরে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ।

    দিনব্যাপী সাতটি ঘাটে ভোগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ঘাটে কলাগাছের ভেলায় সাপে কাটা লক্ষিন্দরকে ভাসিয়ে দিয়ে তাকে সুস্থ করার প্রতীকী পালা পরিবেশিত হয়।

    অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—ব্রতীর ডিরেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম, এডমিন মাইকেল মনি শাহা, নৃত্য শিক্ষক সাজু আহমেদ, সাংবাদিক রাসেল মাহমুদ, গবেষক ফেরদৌস হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিত্রিতা, কো-অর্ডিনেটর তায়মা, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ অনেকে।

    ঢাবি শিক্ষার্থী মিত্রিতা বলেন— “ওই যে ভেলা ভেসে যাচ্ছে, লক্ষিন্দরের দুঃখ দেখে আমার কান্না পাচ্ছে। আগে মনসাকে শুধু বইয়ে পড়েছি, আজকে প্রথমবার সরাসরি দেখলাম। লক্ষিন্দরের বিদায়ের সঙ্গে আমারও দুঃখ বিদায় হলো।”

    ব্রতীর এডমিন মাইকেল মনি শাহা বলেন— “আপনাদের পারফরম্যান্স হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে। বেহুলা-লক্ষিন্দরের যে অনুষ্ঠান আমরা পড়তাম, আজকে বাস্তবে দেখে বুঝলাম তার গভীরতা। আগামী বছর আরও বড় নৌকায়, আরও অনেক গ্রুপের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান হবে। আমরা চাই এটি ডকুমেন্টারি আকারে ইউনেস্কো পর্যন্ত পৌঁছাক।”

    শিল্পগোষ্ঠী পরিচালক নূরনবী ইসলাম বলেন— “শ্রাবণ মাসের শুরুতে এই ঘট বসানো হয়। এটাকে কেউ বলে বেইলা নাচানি, কেউ বলে বেহুলা ভাসান। সাতটি ঘাটে পূজা দেওয়ার পর বেহুলা লক্ষিন্দরকে ভেলায় ভাসিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে স্বামীকে সুস্থ করার পালা হয়।”

    ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারিয়া মুসাব্বির বলেন—
    “আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এই অনুষ্ঠানগুলো খুবই ইউনিক, অথচ খুব কম লোক জানে। ঢাকায় এরকম দেখা যায় না। তাই এখানে এসে সত্যিই নতুন অভিজ্ঞতা পেলাম।”

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রদীপ্ত সাহা বলেন— “আজকের এই আয়োজন আমাদের হারানো ঐতিহ্যের নতুন উপলব্ধি এনে দিয়েছে। সারাদিন বেহুলা-লক্ষিন্দরের পালা দেখে মনে হলো আমরা নিজের সংস্কৃতিকে নতুন করে জানছি।”

    ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খালিদ সোহেল বলেন—
    “জনমানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত এই আয়োজন আমাদের সাহিত্যের লোকনায়ক চাঁদ সওদাগরকে নতুন করে আবিষ্কারের সুযোগ দিয়েছে।”

    শাওনে ডালা ইনচার্জ ও সাধনার কো-অর্ডিনেটর লাবণ্য সুলতানা বলেন— “প্রচণ্ড বৃষ্টির মাঝেও আমরা অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে এসেছি। লক্ষিন্দরের জন্ম থেকে সাপে কাটা, বিয়ে, বেহুলার ভেলায় ভাসানো এবং মনসা দেবীর কাছে ভোগ দেওয়ার পালা—সবকিছুই গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির জীবন্ত উপস্থাপন।”

    ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই আয়োজন গ্রামীণ সংস্কৃতিকে শুধু জীবন্ত রাখেনি, বরং নতুন প্রজন্মকে নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত করেছে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930