তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই ফরিদপুরে ভ্যান চালকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা
সেতু আক্তার, ফরিদপুরঃ ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যানচালক দুলাল মোল্যার ক্রয়কৃত জমি দখল করে নেওয়ার পর এবার তার নানাবাড়ির জমি বিক্রির ৪ লাখ টাকাও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার জমি দখলকারী আওয়ামী লীগ কর্মী সাজাহান মোল্যাদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভ্যানচালক দুলাল মোল্যা বাদী হয়ে ফরিদপুর বিজ্ঞ আদালতে আওয়ামী লীগ কর্মী সাজাহান মোল্যাসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেছে। আদালত মামলাটি ডিবি পুলিশের পর এবার তদন্ত ভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে দিয়েছেন। পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) মামলার বিভিন্ন সাক্ষীদের জবানবন্দী রেকর্ড করেছেন।
মামলার আসামিরা ৫ জন হলেন সালথা থানার আটঘর গ্রামের আদেলদ্দি মোল্যার ছেলে সাজ্জাদুর রহমান ওরফে সাজাহান মোল্যা (৪৫), জরু মোল্যার ছেলে খোকন মোল্যা (৪০), লিটন মোল্যা (৪২), আয়নাল মোল্যার ছেলে কোমি মোল্যা (৪৭) ও ছয়জদ্দি মোল্যার ছেলে পানু মোল্যা (৪২)।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঘটনাস্থল আটঘর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ভ্যানচালক দুলাল মোল্যার বাড়ির পশ্চিমপাশে ২৭০২ নং দাগে ক্রয়কৃত ১৪ শতাংশ জমির মধ্যে আসামিরা জোরপূর্বক সাড়ে ৩ শতাংশ দখল করে রেখেছে। এ ঘটনা বিভি- ন্ন জাতীয় দৈনিক (বাংলা ও ইংলিশ) পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে দুলাল মোল্যার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এর প্রায় ১৫ দিনপর দুলাল মোল্যার মেঝো ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য চলতি বছরের মে মাসের ১১ তারিখে দুলাল মোল্যার নানাবাড়ির প্রাপ্য জমি তার মামার কাছে বিক্রি করে নগদ ৪ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যায় আটঘর দুলালের বাড়ির সামনে ফাঁকা রাস্তায় আসামিরা দুলাল মোল্যার ওপর হামলা চালিয়ে জমি বিক্রির ৪ লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দুলাল মোল্যা জানান, আমি খুবই গরীব মানুষ ভ্যান চালিয়ে কনোমতে সংসার চালাই। আসামিরা আমার ক্রয়কৃত সাড়ে ৩ শতক জমি দখল করে রেখেছে। এ বিষয় নিয়ে আমি স্থানীয় দুই মেম্বার ও সাংবাদিকদের জানানোর পর তারা পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। তিনি বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর আসামি সাজাহান মোল্যা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালমন্দ করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় যা লিখেছিস এজন্য আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। তোর জমিতো পাবি না আরো তুই ৫ লাখ টাকা আমাদের দিবি। এর ১৫ দিন পরেই নানাবাড়ি আমাদের পাওনা জমি বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা নিয়ে আমার বাড়ির সামনে আসামাত্র আসামিরা ৫ জন মিলে আমাকে মারধর করে আমার কাছে থাকা ৪ লাখ টাকা জোর করে নিয়ে যায়।
দুলালের ৪ লাখ টাকা ছিনতাই হওয়ার কথা স্বীকার করে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার লতিফ মোল্যা জানান, আসামিরা সবাই জুলুমবাজ। আমি এবং এই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার এর প্রতিবাদ করায় আসামিরা উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে। আসামিদের অনিয়মের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী সবাই একহয়ে শুক্রবার মানববন্ধন করবে। এ বিষয়ে জানতে আসামিদের কাউকে বাড়িতে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিআলো/তুরাগ