তানোরে বিএনপি কর্মী হত্যার ঘটনায় বহিষ্কার বিএনপির দুই নেতা
নজরুল ইসলাম জুলু, রাজশাহী: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমানকে দল থেকে বহিস্কা করা হয়েছে। মিজানুর রহমান গত ১১ মার্চ ইফতার অনুষ্ঠানের আগে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত গাণিউল ইসলাম হত্যার প্রধান আসামি। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জেলা বিএনপির প্যাডে দলটির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল ও সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে তানোর উপজেলার ৩ নং পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমানকেও দলীয় সদস্য পদ সহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৫ আগস্টের পর থেকেই রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন ও এ্যডভোটেক সুলতানুল ইসলাম তারেকের গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষের শুরু থেকেই মিজানুর রহমানের নাম সামনে এসেছে। বহিষ্কৃত নেতা মিজানুর রহমান ও মজিবুর রহমান রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজশাহীর তানোর উপজেলায় কৃষ্ণপুর এলাকায় বিএনপির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত গণিউল ইসলাম (৫০) তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মোমিনের ভাই। গত বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন।
তিনি আসার আগে কৃষ্ণপুর মোড়ে প্রধান অতিথিকে বরণ করতে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা অবস্থান নেন। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি মুজিবুর রহমানের কর্মীরা প্রধান অতিথিকে বরণ করতে চাইলে মোমিন গ্রুপের কর্মীরা বাধা দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত গণিউল ইসলামকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, গণিউলের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে তিনি মারা যান।
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, গানিউল হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবার ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমানকে। আসামিদের ধরতে কাজ করা হচ্ছে।
বিআলো/শিলি