থানায় নেই পুলিশ, পোড়া ভবনের সামনে দগ্ধ গাড়ি
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর ও যাত্রাবাড়ী থানা থেকে লুটপাট করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রসহ নানা জিনিসপত্র। থানায় নেই কোনো পুলিশ সদস্য। দুর্বৃত্তরা থানা থেকে টেলিফোন সেট, কম্পিউটার ও শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), আগ্নেয়াস্ত্র ও রসদ সরঞ্জামাদি লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ওই থানাগুলোতে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী ভবনের সামনে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে দুজনের মরদেহে পুলিশের পোশাক। আরেকটি মরদেহের হাতে হাতকড়া পরানো।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ রোডের পাশে থানার অবস্থান। স্থানীয়রা জানান, গতকাল (সোমবার) সারাদিন থানা ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। বিকেলের দিকে ব্যাপক গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। পরে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ থানা ছেড়ে যায়। এরপরই দুর্বৃত্তরা থানায় ঢুকে লুটপাট চালায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে পোড়া তিনতলা থানা ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। থানার চত্বরে শ খানেক গাড়ি। এগুলো পুলিশের ব্যবহৃত ও আটক করা গাড়ি। অধিকাংশ গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বাকিগুলোতে আগুন দেয়া হয়েছে। মেঝেতে থানার নথিপত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।
মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানা থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট হচ্ছে। গাড়ি থেকে যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, মোহাম্মদপুর রিং রোডের পাশে আদাবর থানা। সেখানে গিয়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়। থানার সামনে পুলিশের চারটি পোড়া গাড়ি পড়ে আছে। থানা ভবনে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। থানার উল্টো দিকের রাস্তায় জব্দ গাড়ির ডাম্পিং। সেগুলোও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে পোড়া গাড়ি থেকে যন্ত্রাংশ খুলে নিতে দেখা যায় কিশোর-তরুণদের।
পুলিশ জানায়, গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে আদাবর থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে যান। আদাবর থানার প্রধান ফটকে তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে ঢোকা যায়নি।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, পোড়া ভবনের সামনের রাস্তায় সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ভেতরে তথ্য সংগ্রহের জন্য যেতে চাইলে তারা যেতে দেননি।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, বেশির ভাগ থানা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুটপাট করা হয়েছে। এ অবস্থায় পুলিশ কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
বিআলো/শিলি