দুবাই বন্দর জেটিতে নোঙর করল এমভি আব্দুল্লাহ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দর জেটিতে ভেড়ানো হয়েছে। সাতদিন আগে সোমালীয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল জাহাজটি।
২২ এপ্রিল, সোমবার রাতে জাহাজটি বন্দরের জেটিতে ভেড়ানো হয়।
রবিবার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় জাহাজটি দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে সেখানেই নোঙর করে। যে কোনো সময়ে জাহাজটিকে বন্দরের জেটিতে বার্থিং দেয়া হবে। এরপরই শুরু হবে কয়লা খালাসের কাজ।
সব নাবিক সুস্থ আছেন। জলদস্যুদের ডেরা থেকে মুক্ত হওয়ার ৮ দিন পর এমভি আব্দুল্লাহ গন্তব্যস্থল দুবাই পৌঁছাল।
এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন জাহাজটির মালিকপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম।
গণমাধ্যমে তিনি বলেন, দুবাই সময় দুপুর আড়াইটা আর বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এমভি আব্দুল্লাহ হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে প্রবেশ করে। এরপর বন্দরের বি অ্যাঙ্কারেজ এলাকায় নোঙর করে এটি। এখন বন্দরের পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে জাহাজটি, কখন বার্থিং দেওয়া হবে। সম্ভবত রোববার রাত অথবা সোমবার জেটিতে বার্থিং দেওয়া হতে পারে।
জাহাজের এক নাবিক জানান, জোয়ার শুরু হলে রাতের কোনো এক সময়ে জেটিতে জাহাজটি ভেড়ানোর অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে আল-হামরিয়া বন্দরের জেটিতে জাহাজটি ভেড়ানো হয়েছে।
জাহাজটি ভেড়ানোর সময় বন্দর জেটিতে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ৩৩ দিনের জিম্মিদশার পর ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে বাল্ক ক্যারিয়ার এমভি আব্দুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে যাচ্ছিল। ১২ মার্চ সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে এটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জলদস্যুরা অস্ত্রের মুখে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়। ৩২ দিন পর ১৪ এপ্রিল সোমালি দস্যুরা জাহাজ ও এর ২৩ নাবিককে মুক্তি দেয়।
এরপরই জাহাজটি ১ হাজার ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। ৯ দিনের মাথায় এই দূরত্ব অতিক্রম করে জাহাজটি আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাল।
জাহাজ মালিক প্রতিষ্ঠান আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে নাবিকদের মুক্ত করার কথা বললেও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৫ কোটি টাকা) মুক্তিপণ পেয়ে দস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে দেয়। এরপর এটি রওনা দেয় আল-হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে। জলদস্যুপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পার হওয়ার সময় জাহাজটিকে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।
সূত্র জানায়, হামরিয়া বন্দরে ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাসের পর জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবে। জাহাজের ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। এর মধ্যে ২১ জন সেই জাহাজেই ফিরবেন। তাদের পৌঁছাতে ২৫-২৬ দিন সময় লাগবে। অন্য দুই নাবিক দুবাই থেকে ফ্লাইটে দেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কেএসআরএম গ্রুপ জানায়, জাহাজটি আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর দুজন নাবিক উড়োজাহাজে করে দেশে ফেরার কথা রয়েছে। বাকি ২১ জন নাবিকের ওই জাহাজে করে দেশে ফেরার কথা। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বিআলো/শিলি