নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন
বিআলো ডেস্ক: অযাচিত শব্দ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ব্যবহার করছে নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন। তবে দীর্ঘ সময় ধরে নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহারের পর শ্রবণক্ষমতার তারতম্য দেখা দিতে পারে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মস্তিষ্কের স্বাভাবিক শ্রবণপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে নয়েজ ক্যান্সেলিং প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার। আর এই সমস্যা উদ্বেগজনকভাবে দেখা যাচ্ছে তরুণদের মধ্যে।
বেশির ভাগ তারহীন হেডফোনেই এখন অ্যাক্টিভ নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তির দেখা মিলছে। গাড়ি বা বিমানের ইঞ্জিনের শব্দ, এসি বা ফ্যানের শব্দ বা ভিড়ের কোলাহল এড়াতে এই প্রযুক্তির জুড়ি নেই। শব্দতরঙ্গ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য মাইক্রোফোনে চারপাশের শব্দ লাইভ রেকর্ড করে তার ঠিক বিপরীত শব্দতরঙ্গ হেডফোনে প্লে করা হয়। ফলে চারপাশের শব্দ আর ব্যবহাকারীর কানে পৌঁছায় না।
যাতায়াতের সময় বা অফিসের কাজ নির্বিঘ্নে করার জন্য অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে নয়েজ ক্যান্সেলিং ফিচারটি ব্যবহার করছে। ঘুমানোর জন্যও নয়েজ ক্যান্সেলিংয়ের শরণাপন্ন হচ্ছে কেউ কেউ।
বিবিসির প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, অডিটরি প্রসেসিং ডিস-অর্ডারের রোগী প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এটি একটি স্নায়বিক রোগ। রোগীদের শ্রবণক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলেও শব্দ ঠিকমতো বিশ্লেষণ করতে পারে না মস্তিষ্ক। এটি নিউরোডাইভারজেন্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। অথবা যারা ছোটবেলায় কানের সংক্রমণ বা মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছে, তারাও আছে ঝুঁকিতে। কিন্তু সম্প্রতি এমন ব্যক্তিদের মধ্যেও এই রোগটি ধরা পড়ছে, যাদের এরূপ ঝুঁকি নেই।
যুক্তরাজ্যের একদল অডিওলজি বিশেষজ্ঞ বলছেন, নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারই এর একটি সম্ভাব্য কারণ। আশপাশের সব শব্দ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এর প্রযুক্তি। ফলে মস্তিষ্কের শব্দ প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। নয়েজ ক্যান্সেলিং প্রযুক্তি সরাসরি ক্ষতি করে এমন প্রমাণ অবশ্য নেই। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, দীর্ঘ সময় এটি ব্যবহার করা অনুচিত। যদি ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে নিয়মিত বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
অডিওলজি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নয়েজ ক্যান্সেলেশনের ওপর নির্ভর না করে বরং যতটা সম্ভব শব্দ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে। হেডফোন ব্যবহারের প্রয়োজন হলে চেষ্টা করতে হবে নয়েজ ক্যান্সেলিং অফ রাখার। আশপাশের শব্দ থেকে দীর্ঘ সময় বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে সামাজিক যোগাযোগ ও বাস্তব জগতের সঙ্গে সংযোগও দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও।
বিআলো/শিলি