নারায়ণগঞ্জ-৩: উন্নয়নের রূপকার অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বনাম বিতর্কের ঝড়
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে উত্তাপ বাড়ছে
সোনারগাঁওবাসীর আস্থা অধ্যাপক রেজাউল করিমে, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল অডিওতে চাপের মুখে মান্নান। অধ্যাপক রেজাউল করিমের জনপ্রিয়তা বনাম আজহারুল মান্নানের বিতর্কিত মন্তব্য
নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের রাজনীতিতে একজন নাম যা প্রজন্মের মুখে মুখে ঘুরে — অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। সাবেক প্রতিমন্ত্রী (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়), চারবার নির্বাচিত সফল সংসদ সদস্য, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
রাজনীতির পথে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক “জাগো দল” থেকে। এরপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপির সূচনালগ্নে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন এবং দলীয় রাজনীতির হাল ধরেন।
সোনারগাঁবাসীর কাছে তিনি শুধুই রাজনীতিবিদ নন, বরং একজন বাস্তব রূপকার। তার নেতৃত্বে সোনারগাঁওয়ের রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজসহ প্রতিটি খাতে এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। উন্নয়নের সেই ছোঁয়া আজও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে রয়েছে।
জনগণের বিশ্বাস, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন সবচেয়ে নিরাপদ এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে অধ্যাপক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে। সততা, অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতাই তাকে আবারও এই আসনের নেতৃত্বে দেখতে চায় জনসাধারণ। এলাকাবাসীর দাবি—আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমকেই দেখতে চান তারা।
বিপরীতে বিতর্কের ঝড়: আজহারুল ইসলাম মান্নান
অপরদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ–সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া আজহারুল ইসলাম মান্নানকে ঘিরে বিতর্ক থামছে না। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ড তাকে কঠিন সমালোচনার মুখে ফেলেছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে দেখা যায়, মান্নান এক সাংবাদিকের সঙ্গে ফোনালাপে নিজের ও পরিবারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অডিও অনুযায়ী, সাংবাদিক অভিযোগ করেন—মোগরাপাড়া চৌরাস্তার ফুটপাত, সরকারি জায়গার সিএনজি ও বাসস্ট্যান্ড এবং মেঘনা টোল প্লাজা দখলের ঘটনায় মান্নানের ছেলে জড়িত।
উত্তরে মান্নান বলেন, “আগে গিয়া নিজেরা তদন্ত কইরা হিয়ার পরে পত্রিকায় লেখেন। তাইলে আমি, আমার পোলায় গিয়া মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ড খাই, ফুটপাত খাই… সারা বাংলাদেশেই বিএনপির পোলাপান করে। ঢাকাতে মির্জা আব্বাসের পোলাপান হগল (সবাই) করে, দেখতে চান আপনে?” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
এই অডিওর কারণে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন বলেন, “নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এমন বক্তব্য বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করেছে। এতে আমাদের সম্মানহানি ঘটেছে।”
এর আগে ৪ নভেম্বর মান্নানের জামাতা মাসুম বিল্লাহর দেওয়া হুঁশিয়ারিমূলক বক্তব্যও সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দেয়। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিএনপির স্থানীয় নেতারা প্রকাশ্যে নিন্দা জানান।
আজহারুল ইসলাম মান্নান ফোনে বলেন, “সামনাসামনি আসেন, কথা বলি। যে সাংবাদিকের সঙ্গে আমার কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে, তিনি আমার প্রতিপক্ষের বানানো সাংবাদিক।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই মান্নান ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের বক্তব্য ও আচরণ দলের ভেতরে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের সময় এই বিতর্ক তাকে আরও চাপে ফেলতে পারে।
বিআলো/তুরাগ



