নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে বিভ্রান্তি
সাখাওয়াতের মনোনয়ন দাবি, মাসুদ বলছেন—‘বহাল আছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর–বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে একের পর এক নাটকীয় ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে চরম বিভ্রান্তি। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দুইজনই নিজেদের মনোনয়নপ্রাপ্ত বলে দাবি করছেন। তারা হলেন—শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মাসুদুজ্জামান মাসুদের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান থাকলেও ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ ঘোষণা দেন, তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেবেন না এবং মনোনয়নও গ্রহণ করবেন না।
এই ঘোষণার পরপরই তার সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে নির্বাচনে রাখার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দলীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ওই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ সভায় অংশ নেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনি এদিন চাদর মুড়িয়ে ও মুখে মাস্ক পরে একাই কার্যালয়ে প্রবেশ ও বের হন। পরদিন ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে তিনি আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেন।
এরই মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর রাত থেকে মহানগর বিএনপির একাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করতে থাকে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মহানগর আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানকে মনোনয়ন দিয়েছে। একই রাতে জানা যায়, কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির এক সদস্য সাখাওয়াত হোসেন খানকে ২০ ডিসেম্বর গুলশান কার্যালয়ে তারেক রহমানের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য অবহিত করেন।
এর ধারাবাহিকতায় ২০ ডিসেম্বর শনিবার গুলশান কার্যালয়ে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন সাখাওয়াত হোসেন খান। এর আগেই সকাল ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার ঘোষণা দেন।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে সাখাওয়াত হোসেন খান লেখেন,
“আলহামদুলিল্লাহ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারুণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমানকে ধন্যবাদ—আমাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য। আমি বিশ্বাস করি, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে আগামীর নারায়ণগঞ্জ ও বন্দর গড়তে জনগণ আমার পাশে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ।”
এর কিছুক্ষণ পরই মাসুদুজ্জামান মাসুদ তার ফেসবুক পেজে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে লেখেন, “অফিসিয়াল নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত দলের প্রার্থিতা অপরিবর্তিত রয়েছে। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।”
এদিকে একই আসনে দুই নেতার এমন পাল্টাপাল্টি দাবিতে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম বিভ্রান্তি ও উৎকণ্ঠা। এখন দলীয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন সবাই।
বিআলো/তুরাগ



