নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র, নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই। ৮৯ বছর বয়সে পেরুর লিমায়, পরিবার-পরিজনের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে ইয়োসার ছেলে আলভারো বার্গাস ইয়োসা লিখেছেন, “গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা মারিও বার্গাস ইয়োসা আজ লিমায় আমাদের সঙ্গে থাকাকালীন বিদায় নিয়েছেন। এটি ছিল একদম শান্ত, সম্মানের মুহূর্ত।”
মারিও বার্গাস ইয়োসা ছিলেন লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা। তার কালজয়ী উপন্যাসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল (১৯৬৯)’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য অ্যান্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৮১)’ এবং ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার (১৯৭৭)’। শেষোক্ত উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৯০ সালে নির্মিত হয় হলিউড ছবি ‘টিউন ইন টুমরো’।
পেরুর প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট কার্যালয় ইয়োসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তাকে “জাতীয় গর্ব ও সাংস্কৃতিক পথপ্রদর্শক” হিসেবে স্মরণ করা হয়।
১৯৩৬ সালে পেরুর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আরেকিপায় জন্ম নেওয়া ইয়োসার শৈশব কাটে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায়, যেখানে তার দাদা ছিলেন কনসাল। সামরিক স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করে তিনি পেরুর স্যান মার্কোস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর মাদ্রিদের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন। লন্ডনের কিংস কলেজে শিক্ষকতা এবং পরবর্তীতে ওয়াশিংটন ও বার্সেলোনায় অবস্থানের পর তিনি ১৯৭৪ সালে দেশে ফিরে আসেন।
১৯৯০ সালে পেরুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক জীবনেও আলোচনায় আসেন ইয়োসা। তবে দ্বিতীয় দফার ভোটে পরাজিত হন আলবের্তো ফুজিমোরির কাছে। এরপর তিনি স্পেনে অভিবাসন নেন এবং ১৯৯৩ সালে গ্রহণ করেন স্পেনের নাগরিকত্ব। ১৯৯৪ সালে তিনি লাভ করেন স্পেনের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ‘সেরভান্তেস’।
২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন মারিও বার্গাস ইয়োসা। সেসময় তিনি জানান, তার সাহিত্যিক পথচলায় সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন ফরাসি লেখক গুস্তাভ ফ্লবার্ত।
বিআলো/শিলি