পাটুরিয়া-আরিচায় ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের ঢল, ট্রেনেও প্রচণ্ড চাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরি ও লঞ্চঘাট এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মস্থলে ঢাকায় ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। লঞ্চ ও ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা-যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে আসছেন পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীরা। অনেকেরই ঈদের ছুটি শেষ ইতিমধ্যেই। এদিকে অনেক পোশাক কারখানা আগামীকাল বুধবার থেকে খোলার কথা। এ কারনে এসব কারখানার কর্মীরা আগেভাগেই বাড়ি থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন।
আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম খালেদ নেওয়াজ জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের ঢল নেমেছে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে। এ নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি দিয়ে যাত্রী, প্রাইভেটকার ও জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ। এ কারনে এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ বাস মালিক শ্রমিকরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
সাধারণত সেলফি, নীলাচল, হিমাচল, যাত্রীসেবা বাসের ভাড়া পাটুরিয়া থেকে নবীনগর পর্যন্ত ১২০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাটুরিয়া থেকে গাবতলীর ভাড়া অন্য সময়ে নেওয়া হয় ১৮০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হচ্ছেন বাস শ্রমিকদের হতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাস শ্রমিক জানান, ঘাটে জিপির (গেটপাস) নাম করে মালিক সমিতির ঘাট সুপারভাইজার সুলতানের নেতৃত্বে সেলফি থেকে গাড়ি প্রতি ৬০০ টাকা এবং মালিক সমিতির ব্যানারের নামে নীলাচল থেকে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ঈদুল ফিতরের ফিরতি যাত্রার চতুর্থদিনে সকাল থেকেই প্রচুর যাত্রী ঢাকা ফিরছেন। এতোদিন অধিকাংশ যাত্রীরা নিজে ফিরলেও আজ থেকে পরিবার নিয়ে তাদেরকে ফিরতে দেখা গেছে। অনেকে আজ থেকে শুরু অফিস ধরতে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে রাজধানীতে আসছেন।
সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ঈদের ফিরতি যাত্রার প্রথম তিনদিন খুব বেশি চাপ থাকলেও এদিন চাপ ছিল অনেক বেশি।
এদিকে চট্রগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গগামী একতা এক্সপ্রেসসহ একাধিক ট্রেন ছাড়তে দেরি করছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলো অধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকা প্রবেশ করায় যাত্রীচাপের যথাসময়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছে না।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল থেকে পৌনে বারোটা পর্যন্ত ঢাকায় ১৪টি ট্রেন এসেছে আর সবগুলোই ঢাকা ছেড়ে গেছে। ঢাকায় আসা ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের ভীড় অনেক ছিল বেশি। কিছু ট্রেন দেরিতে ছাড়লেও শিডিউল জটিলতা নেই।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ১৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয় ৬ এপ্রিল; ১৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ৭ এপ্রিল; ১৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ৮ এপ্রিল এবং ১৯ এপ্রিলের টিকিট ৯ এপ্রিল অগ্রিম বিক্রি করেছে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর ২ ঘণ্টা আগে থেকে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে বিক্রি করা হয়।
বিআলো/শিলি