পাবনায় একসঙ্গে এইচএসসি পাশ করলেন বাবা-মা ও ছেলে
এস এম আলমগীর চাঁদ, পাবনা: পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামের বি এম ফারুক, তার স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা ও ছেলে হুজ্জাতুল ইসলাম এ বছরের এইচএস সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাবা বি এম ফারুক ৪.৭১, মা জাকিয়া সুলতানা ৪.২৫ ও ছেলে হুজ্জাতুল ৪.৭১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
উপজেলার গুপিনপুর গ্রামের মৃত জানু বিশ্বাসের ছেলে বি এম ফারুক ২০০২ সালে দশম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন বিয়ে করেন উপজেলার মানিক হাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামের ময়েন উদ্দিনের মেয়ে জাকিয়া সুলতানাকে। ২০০৩ সালে তাদের উভয়ের এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও গর্ভে সন্তান আসায় এবং সাংসারিক চাপে শেষ পর্যন্ত আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ২০২২ সালে খয়রান লুকমান হাকিম টেকনিক্যাল স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন এই দম্পতি।
গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচ এস সি ফল প্রকাশের পর পরিবার পরিজন ও এলাকাবাসীর প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
মা বাবার সঙ্গে এইচ এস সি পাশ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত ছেলে হুজ্জাতুল ইসলাম বলেন, মা বাবা সংসার সামলিয়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন এ জন্য আমি অনেক খুশি।
মা জাকিয়া সুলতানা বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার। কিন্তু সংসার জীবনে প্রবেশ করায় তা সম্ভব হয়ে ওঠে নাই। স্বামী ও ছেলের পরামর্শে কলেজে ভর্তি হয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। এ জন্য অনেক খুশি।
বাবা বি এম ফারুক বলেন, অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসারের হাল ধরার কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় নাই। উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল, তাই এ বছর স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। এ জন্য খুব ভালো লাগছে। সবার কাছে দোয়া চাই।
সুজানগর সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাসেত বলেন, বি এম ফারুক, তার স্ত্রী ও ছেলে এ বছর তার প্রতিষ্ঠান থেকে এইচ এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালোভাবে পাশ করেছে। ছেলের সঙ্গে মা বাবার পাশ করার এমন সাফল্য অনেককে অনুপ্রাণিত করবে।
বিআলো/তুরাগ