পোল্ট্রি খাতে অপূরণীয় ক্ষতি; আসন্ন বাজেটে প্রান্তিক খামারিদের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দের সুপারিশ বিপিএ’র
আমিনুল ইসলাম: তীব্র তাপদহনে হিট স্ট্রোকে গত এক মাসে ৫ থেকে ১০ শতাংশ মুরগি মারা যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিদের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
নরসিংদী, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কাপাসিয়া, পাবনা, রাজশাহী, রংপুর, কক্সবাজার, কুমিল্লা, গাজীপুর, সাভার, কিশোরগাঞ্জ, ময়মনসিংহ, ফেনী,ঝালকাঠী,পিরোজপুর সহ দেশের প্রায় সব জেলাতেই প্রান্তিক খামারিরা এখন এক ভয়াবহ ক্ষতির মুখোমুখি। তীব্র তাপপ্রবাহ, লাগাতার লোডশেডিং ও বাজারে অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মুরগি।এতে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির মৃত্যুর হার গড়ে ১০ শতাংশ এবং লেয়ার (ডিম পাড়া) মুরগির মৃত্যু ৫ শতাংশে পর্যন্ত পৌঁছেছে।
দেশে খামার রয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার, প্রতিটি খামারে কমপক্ষে ৫-১০ শতাংশ মুরগি মারা গিয়েছে জানিয়ে সুমন বলেন, যার বাজারমূল্য ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। সে হিসাবে যদি প্রতিটি খামারে ক্ষতির পরিমাণ গড়ে ৫০ হাজার টাকা ধরা হয়, তাহলে লোকসানের পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকা দাঁড়ায়। এতে প্রান্তিক খামারিরা পুঁজি হারিয়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে সামনের দিনগুলোতে ডিমের উৎপাদন কমবে ৫ শতাংশ এবং মাংস উৎপাদন কমবে ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, যা খাদ্যনিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।
তিনি বলেন, মাত্র ২০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে যে করপোরেট কোম্পানিগুলো, সরকারের নজর সেখানেই সীমাবদ্ধ। অথচ দেশের ৮০ শতাংশ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করেন প্রান্তিক খামারিরা, যারা অবহেলার শিকার। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে-তাদের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে গেলেও কি সরকারের টনক নড়বে না? এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার খামারি চরম ঋণের জালে পড়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হবেন বলেও জানান সুমন হাওলাদার।
তিনি বলেন, প্রান্তিক খাতের এই বিপর্যয় সরাসরি হুমকির মুখে ফেলবে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। তাই অবিলম্বে সরকারের উচিত প্রান্তিক খামারিদের দিকে নজর দেয়া এবং করপোরেট সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরা। এছাড়াও বিপিএ ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে পোল্ট্রি খাতের তথা প্রান্তিক খামারিদের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দের সুপারিশ করেন।
সুমন হাওলাদার বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাত কৃষি-ভিত্তিক অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ, যা সরাসরি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি নিশ্চিতকরণ ও কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত। এই খাতের মেরুদণ্ড হলো প্রান্তিক খামারিরা, যাঁরা সীমিত মূলধন ও অবকাঠামো নিয়ে প্রতিদিন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে জাতিকে পুষ্টি জোগাচ্ছেন। অথচ এই পরিশ্রমী খামারিরাই প্রতিনিয়ত বাজারের অস্থিরতা, খাদ্য ও ঔষধের মূল্যবৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কর্পোরেট সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের কারণে টিকে থাকার লড়াইয়ে নিপতিত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) দেশের নিবন্ধিত প্রান্তিক খামারি ও ডিলারদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি জাতীয় সংগঠন হিসেবে এই খাতের টেকসই উন্নয়ন এবং খামারিদের অধিকার সুরক্ষায় একটি সমন্বিত ও বাস্তবমুখী বাজেট সুপারিশ পেশ করছে। নিচে দশটি খাতে মোট ২,০০০ কোটি টাকার একটি সুসংহত বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলো, যার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পোল্ট্রি খাতের পুনরুত্থান, বাজারের স্থিতিশীলতা এবং প্রান্তিক খামারিদের ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে।
১. ফিডে ভর্তুকি প্রদান — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ৪০০ কোটি টাকা
ডিম ও মুরগি উৎপাদনে ফিড হলো সবচেয়ে ব্যয়বহুল উপাদান, যা একটি খামারের মোট উৎপাদন খরচের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ। ফিডের ক্রমবর্ধমান মূল্য বহন করতে না পেরে প্রতিদিন অসংখ্য খামারি লোকসানে পড়ে খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই, নিবন্ধিত প্রান্তিক খামারিদের জন্য প্রতি কেজি ফিডে নির্ধারিত হারে সরাসরি নগদ ভর্তুকি প্রদান জরুরি। এতে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পাবে, খামার চালু রাখা সম্ভব হবে এবং খামারিরা পুনরায় লাভজনক উৎপাদনে ফিরে আসতে পারবেন।
২. ওষুধ ও ভ্যাকসিনে সহায়তা — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ২০০ কোটি টাকা
রোগবালাই পোল্ট্রি খাতের এক অবিচ্ছেদ্য চ্যালেঞ্জ। অধিকাংশ প্রান্তিক খামারি সময়মতো ভ্যাকসিন ও মানসম্মত ওষুধের অভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হন। এই বাজেটের আওতায় সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভ্যাকসিন খামারিদের কাছে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন হাব এবং মোবাইল টিকা সরবরাহ ইউনিট স্থাপন করা হবে।
৩. সুদমুক্ত ও জামানতবিহীন ঋণ — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ৩০০ কোটি টাকা
প্রান্তিক খামারিদের মূলধন সংকট দূর করে খামার পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণে সহায়তা দিতে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ও জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করা হবে। ঋণের জন্য খামার নিবন্ধন এবং নির্দিষ্ট ব্যয় পরিকল্পনা দাখিল বাধ্যতামূলক হবে। ঋণ পরিশোধে ১–২ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সহজ কিস্তি ব্যবস্থা থাকবে, যাতে খামারিরা চাপমুক্তভাবে খামার পরিচালনা করতে পারেন।
৪. সমবায় ভিত্তিক ফিড মিল ও হ্যাচারি স্থাপন — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ৩০০ কোটি টাকা
বড় কর্পোরেট কোম্পানির ওপর নির্ভরতা হ্রাস করে প্রান্তিক খামারিদের হাতে উৎপাদনের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দিতে উপজেলাভিত্তিক খামারি সমবায় গঠন করে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ছোট ফিড মিল ও হ্যাচারি স্থাপন করা হবে। এতে খামারিরা মানসম্মত বাচ্চা ও কাঁচামাল সহজলভ্য মূল্যে পেয়ে উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
৫. আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ৩০০ কোটি টাকা
পচনশীল পণ্য হওয়ায় ডিম ও মুরগি বাজারজাতকরণে প্রান্তিক খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এই বাজেটের আওতায় উপজেলাভিত্তিক আধুনিক কোল্ড স্টোরেজ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট স্থাপন করে খামারিদের পণ্য সংরক্ষণ ও ফ্রোজেন পণ্য উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করা হবে। এতে পণ্যের মূল্য সংযোজন হবে এবং বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
৬. ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন ও অনলাইন মার্কেটপ্ল্যাটফর্ম — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ১০০ কোটি টাকা
দেশের সব প্রান্তিক খামারিকে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল ডাটাবেসে অন্তর্ভুক্ত করে তাদেরকে একটি ইউনিক আইডি প্রদান করা হবে। এই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সরকারিভাবে সহায়তা প্রদান, নীতিনির্ধারণ ও নজরদারি সহজ হবে। পাশাপাশি একটি অনলাইন মার্কেটপ্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হবে, যেখানে খামারিরা সরাসরি পাইকারদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
৭. প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ১০০ কোটি টাকা
প্রান্তিক খামারিদের আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ, বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দক্ষ করে তোলার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। নারী ও যুব উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ কোটা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে, যাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয় এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।
৮. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ২০০ কোটি টাকা
চরম আবহাওয়া যেমন তাপপ্রবাহ, অতিবৃষ্টি ও ঠান্ডা খামারিদের জন্য বড় হুমকি। এই বাজেট থেকে একটি জলবায়ু সহায়তা তহবিল গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জরুরি নগদ সহায়তা এবং প্রতিরোধমূলক অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা প্রদান করা হবে। যেমন, ছাদ ইনসুলেশন, কুলিং সিস্টেম, ঠান্ডা পানি সংরক্ষণ ইত্যাদি।
৯. অবকাঠামোগত উন্নয়ন — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ১০০ কোটি টাকা
প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন ও বাজার সংযোগ সহজ করতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ, রাস্তা, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খামারবাজার উন্নয়ন ও ভ্যাকসিন হাব নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য এই বাজেট ব্যবহার করা হবে।
১০. প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও লাইভ বাজার নিয়ন্ত্রণ — প্রস্তাবিত বরাদ্দ: ১০০ কোটি টাকা
খামারিরা যেন স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্মত প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে পারেন, সেজন্য প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি সহায়তা ও বাজার সংযোগ নিশ্চিত করা হবে। ধীরে ধীরে লাইভ মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কোল্ড চেইনের আওতায় প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বিপণনকে উৎসাহিত করা হবে।
তাছাড়া বিপিএ বাজেট বাস্তবায়নের সম্ভাব্য সুফলের কথা ব্যক্ত করে বলেন, এই ২,০০০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার প্রান্তিক খামারির ও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ কর্মসংস্থান ও জীবিকা সুরক্ষিত হবে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া হাজার হাজার খামার পুনরায় চালু হয়ে উৎপাদনে ফিরতে পারবে।
খামারিরা বড় কর্পোরেট কোম্পানির নির্ভরতা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে উৎপাদন চালাতে সক্ষম হবেন।
ভোক্তারা সুলভ মূল্যে ডিম ও মুরগি পেতে শুরু করবেন, যা দেশের পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
দেশে ন্যায্য বাজারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাবে, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং পোল্ট্রি খাত হবে আরও স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত।
নারীদের অংশগ্রহণ, যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
সর্বোপরি, একটি আত্মনির্ভর, টেকসই ও স্থিতিশীল পোল্ট্রি খাত গড়ে উঠবে, যা বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।
এই ২,০০০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে শুধু প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা হবে না, বরং গোটা জাতির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পুষ্টি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি তৈরি হবে। কারণ পোল্ট্রি খাত শুধু একটি কৃষিভিত্তিক খাত নয়, এটি গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তি, খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ এবং দেশের কোটি মানুষের জীবিকার উৎস।
যেখানে লক্ষ লক্ষ প্রান্তিক খামারি ন্যায্য দামে ফিড, ঔষুধ ও ভ্যাকসিন পেলে টিকে থাকতে পারবেন; সেখানে সরকারি সহায়তায় গড়ে ওঠা সমবায়ভিত্তিক ফিড মিল, হ্যাচারি ও কোল্ড স্টোরেজ খামারিদের স্বাধীনতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াবে। ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন, সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে খামারিরা হবে আরও দক্ষ, সচেতন ও সংগঠিত। জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণ এবং প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ খামারিদের আয় নিশ্চিত করবে এবং উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
এই বাজেট কেবল একটি অর্থ বরাদ্দ নয় বরং এটি হবে দেশ ও সরকারের একটি দূরদর্শী ও ঐতিহাসিক বিনিয়োগ। এই বিনিয়োগ গ্রামীণ জীবিকাকে টিকিয়ে রাখবে, খাদ্য অধিকারকে সংবেদনশীল বাস্তবতায় রূপ দেবে, এবং একটি স্বনির্ভর, টেকসই অর্থনীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথকে সুদৃঢ় করবে।
বিআলো/তুরাগ



