প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে কলেজছাত্রীকে নির্যাতন, লজ্জায় আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিনিধি: তুচ্ছ ঘটনার জেরে প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় অপমানে আত্মহত্যা করেছেন ইসরাত জাহান মৌফিক (১৮) নামে এক কলেজছাত্রী।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা।
এর আগে বুধবার (২৪ জুলাই) নিজ ঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
নিহত ইসরাত লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের গুড়িয়াদহ গ্রামের আব্দুল মতিন মণ্ডলের মেয়ে। তিনি স্থানীয় কাউনিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, প্রতিবেশী মৃত শরিয়ত উল্লাহ মণ্ডলের ছেলে সুলতান মণ্ডল, সিরাজ আলী মণ্ডল ও শাহজাহান আলীর সঙ্গে আব্দুল মতিন মণ্ডলের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। বুধবার সকালে সুলতান মণ্ডল গংদের হাঁস মতিন মণ্ডলের আমন ধান ক্ষেত নষ্ট করছিল। বিষয়টি দেখে ধান ক্ষেত থেকে হাঁস তাড়িয়ে দেন মতিন মণ্ডলের মেয়ে কলেজছাত্রী ইসরাত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইসরাতকে একা পেয়ে ওই দিন প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে মারধর ও মধ্যযুগীয় নির্যাতন করেন সুলতান মণ্ডল গংরা। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে সুলতান মণ্ডল গংদের হামলায় রক্তাক্ত জখম হন তার মা। স্থানীয়রা এসে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে ইসরাতের মাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গ্রামবাসীদের সামনে বিবস্ত্র ও মধ্যযুগীয় নির্যাতনে লজ্জা এবং অপমানে ওই দিন রাতেই নিজ ঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ফিরে তার বাবা মতিন মণ্ডল ঘরে মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত ইসরাত জাহান মৌফিকের বাবা মতিন মণ্ডল বাদী হয়ে সুলতান মণ্ডল গংদের ১২জনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার রাতে সদর থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছে। এতে লজ্জা ও অপমান সইতে না পেরে ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিআলো/শিলি