প্রস্তুত শোলাকিয়া ময়দান, ইমামতি করবেন না মাওলানা ফরীদ মাসঊদ
নিজস্ব প্রতিবেদক: উপমহাদেশের প্রাচীন ও সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ১৯৭তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু এবার ইমামতি করবেন না জামাতে ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তার বিকল্প হিসেবে ইমামতি করবেন শহরের বড় বাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শোয়াইব আব্দুর রউফ।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। জেলা প্রশাসকের পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ নূরে আলম, র্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার আশরাফুল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মনতোষ বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু রাসেল, কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। তাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে অজুর পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুসল্লিদের কোনো শারীরিক সমস্যা হলে এখানে মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখানে কাজ করবেন। ওয়াচ টাওয়ার ও মাঠের আশপাশে পর্যাপ্তসংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যসহ আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
ঈদের জামাতে অংশ নিতে মুসল্লিদের জন্য ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে ডিসি বলেন, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-১ ভৈরব থেকে ছাড়বে ভোর ৬টায়, কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায়, ভৈরব পৌঁছাবে দুপুর ২টায়। আর শোলাকিয়া এক্সপ্রেস-২ ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে ভোর পৌনে ৬টায়, কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়। কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায় এবং ময়মনসিংহে পৌঁছাবে বিকেল ৩টায়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে পুরো এলাকার ফুটেজগুলো আমরা সংগ্রহ করবো। নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রত্যেকটি গেটে আর্চওয়ে থাকবে। নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে মুসল্লিদের। এছাড়া প্রত্যেককে সার্চ করার জন্য মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। আশপাশে যেসব স্থাপনা রয়েছে, প্রত্যেকটিতে পুলিশ ডিউটিতে থাকবে। এরইমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে কাজ করছেন। আশপাশের যে হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে, সেগুলোকেও নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। এবার কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই।
র্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ঈদগাহে আসা-যাওয়ার গেটগুলোতে র্যাব সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। ওয়াচ টাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় স্নাইপার রাইফেল থাকবে, যাতে যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ করা যায়। বেশকিছু প্যাট্রোল কার থাকবে। সেগুলো শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেবে।
বিআলো/শিলি