ফ্যাশন থেকে প্রতীকে! ডায়ানার ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’
বিআলো ডেস্ক: ফ্যাশনের এক আইকনিক অংশই নয়, ব্যক্তিগত শক্তি ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবেও ইতিহাসে স্থান করে নেওয়া প্রিন্সেস ডায়ানার ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’ আবারও আলোচনায়। প্যারিসের মিউজে গ্রেভাঁ জাদুঘরে উন্মোচিত নতুন মোমের মূর্তিতে দেখা গেছে তাকে সেই বিখ্যাত কালো অফ-শোল্ডার গাউনে, যার বর্তমান মূল্য ছাড়িয়েছে ৬ লাখ ডলার।
১৯৯৪ সালে লন্ডনের সারপেন্টাইন গ্যালারিতে ভ্যানিটি ফেয়ারের গালায় কালো অফ-শোল্ডার গাউনে হাজির হয়ে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। পুরো বিশ্ব যখন সেদিনই আইটিভির এক তথ্যচিত্রে প্রিন্স চার্লসের অবিশ্বস্ততার স্বীকারোক্তি জানতে পারে, ঠিক সেই রাতেই নিজস্ব ভঙ্গিতে বার্তা দিতে দৃঢ়ভাবে জনসমক্ষে আসেন ডায়ানা- যা পরবর্তীকালে ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’ নামে পরিচিত হয়।
নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিক থেকেই চার্লস-ডায়ানার দাম্পত্যে অস্থিরতার খবর ছড়ায়। ১৯৯২ সালে তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণা আসে এবং ১৯৯৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। চার্লস যখন বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যক্তিগত টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আনলেন, তখন ডায়ানা কোনো বক্তব্য না দিয়েও নিজের অবস্থান জানান পোশাকের মাধ্যমেই।
পিপল ম্যাগাজিনের এক সাক্ষাৎকারে নির্বাহী সম্পাদক মিশেল টাউবার জানান, এমন পরিস্থিতিতে যে কেউ আড়ালে চলে যেত, কিন্তু ডায়ানা সামনে আসার পথ বেছে নেন। স্টাইল বিশেষজ্ঞ ব্রিটানি টেলারিকো বলেন, তিনি জানতেন সেদিন দৃষ্টি থাকবে শুধু তার দিকেই- আর সেই উপলব্ধিতেই তিনি নিজেকে তুলে ধরেন নতুন শক্তিতে।
গল্পের মজার অংশ হলো, ডায়ানা প্রথমে ভ্যালেনটিনোর একটি পোশাক পরার কথা ভাবলেও শেষ মুহূর্তে বদলে নেন ডিজাইনার ক্রিস্টিনা স্ট্যামবোলিয়ানের গাউনটি। তিন বছর ধরে যা তার আলমারিতে ঝুলে ছিল।
ডায়ানা পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে নিজের ৭৯টি গাউন নিলামে তোলেন, যার মধ্যে ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’ও ছিল। ২৪ হাজার ১৫০ ডলারে সেটি কেনেন স্কটিশ ব্যবসায়ী গ্রায়েম ম্যাকেনজি। গাউন বিক্রি থেকে সংগ্রহীত প্রায় ৩০ লাখ ডলার তিনি দান করেন এইডস ও ক্যানসারবিরোধী কাজে।
২০২৩ সালে আবারও নিউইয়র্কে সদবিসের নিলামে উঠলে চারজন দরদাতার প্রতিযোগিতায় পোশাকটির দাম পৌঁছায় ৬ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ডলারে- প্রমাণ করে, ডায়ানার এই সাহসী ফ্যাশন বার্তা আজও অমলিন। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
বিআলো/শিলি



