বড় ভাই ও ভাতিজার মারধরে হাসপাতালে ছোট ভাই
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ায় আপন বড় ভাই ও ভাতিজার হাতে বেধড়ক মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে শুয়ে মৃত্যুশয্যায় দিন গুণছেন আপন ছোট ভাই। ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের পৌর শহরের শুড়কীমিল এলাকার মজিদা খাতুন সরকারি মহিলা কলেজ পাশে।
এ ঘটনায় সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আহত ছোট ভাই রতন মিয়ার (৩৫) স্ত্রী লাইলি বেগম। অভিযুক্ত বড়ভাই হলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক আর্মি সদস্য রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং তার ছেলে রিজভি আহমেদ শুভ (২৫)।
এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে গেলে অসুস্থ রতন মিয়াকে ব্যথায় কাতরাতে দেখা যায়। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাট জেলা শহরের মজিদা খাতুন মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকার তাদের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেশকিছুদিন থেকে বড় ভাই রফিকুল ইসলামের সাথে ছোট ভাই রতন মিয়া ও তার তিন বোনের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ছোট ভাই রতন মিয়া চাকরির সুবাধে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন। এই সুযোগে বড় ভাই রফিকুল তার বাবার কাছ সমস্ত সম্পত্তি তার নামে লিখে নেয়। এর কিছুদিন পর তাদের বাবা মারা যান। খবর শুনে রতন মিয়া তার পরিবার নিয়ে লালমনিরহাটে চলে আসেন।
পরে বসতভিটার ভাগ বাটোয়ার কথা উঠলে বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, তার বাবা সমস্ত বসতভিটা তার নামে লিখে দিয়েছেন। তখন সে বাড়ির কাগজপত্র দেখান এবং বাড়ি থেকে রতন মিয়াকে বের করে দেন। এ ঘটনার পর গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রতন মিয়া তার তিন বোনকে নিয়ে তাদের অসুস্থ মাকে দেখতে গেলে বড়ভাই রফিকুল ইসলাম ও ভাতিজা শুভ মিলে রতন মিয়াকে তাদের বাড়িতে যাওয়ায় বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় রতন মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে বাঁচাতে তার স্ত্রী ও বোনেরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেধরক মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন সেখানে এলে গুরুতর আহত অবস্থায় রতন মিয়াকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়।
এ বিষয়ে রতন মিয়ার বোন শাবানা বেগম বলেন, আমার বড় ভাই সাবেক আর্মি সদস্য রফিকুল ইসলাম আমাদের ভাই বোনদের ঠকিয়ে কৌশলে আমার বাবার কাছ থেকে সমস্ত বসতভিটা তার নামে লিখে নিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে বড় ভাই আমাদেরকেও গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ঘটনার অস্বীকার করে বলেন, আমার ওপর তারা যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলো সঠিক নয়। আমি ছোট ভাইকে মারিনি। আমার বাবা স্বেচ্ছায় আমাকে জমি লিখে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ফারুক বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিআলো/তুরাগ