বাংলাদেশে কবে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’
বিআলো প্রতিবেদক: দেশের ৫৮ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে তাপপ্রবাহ। এমন পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে ৪৮ ঘণ্টার সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তাপপ্রবাহ শেষে আগামী ২১ মে-এর পর সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। যা পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ণ রূপ নিলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।
ভারতের আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে মাসে বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত। এরপর সেটি ক্রমে শক্তি বাড়িয়ে ২৪ মে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। পরদিন ২৫ মে সন্ধ্যার পর তা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।
এদিকে গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ ছিল ৫ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে ২ মে বৃষ্টি হলেও দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তাপ প্রশমিত হয়েছে ৫ মে-এর বৃষ্টির পর। নতুন করে তিন দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (১৫ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ছিল ৩৫ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সার্বিক বিষয় নিয়ে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আগামী দুই দিন বিক্ষিপ্তভাবে দেশের পাঁচ বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন মডেল পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২১ মের পর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে, যেটি পরে লঘুচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এটির গতিপ্রকৃতি এখন স্পষ্ট নয়। লঘুচাপ সৃষ্টির পর বলা যাবে।
এর আগে ২০০৯ সালের ২৫ মে সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’। সেই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের ১৫তম বর্ষের সন্ধ্যাতেই ‘রেমাল’ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হতে পারে। তবে কোথায়, কত গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে– তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনুমান করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে কোথাও এটি আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উপকূল এলাকায়। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত।
এছাড়া সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
বিআলো/শিলি