• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ
    • যোগাযোগ
    • অভিযোগ
    • ই-পেপার

    বিশ্ব পানি দিবসে সুন্দরবনের আগুন: পানির সংকট আর কতকাল? 

     dailybangla 
    22nd Mar 2025 10:50 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    আজ ২২ মার্চ, বিশ্ব পানি দিবস। সারা বিশ্বে দিনটি পালিত হয় নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝাতে। কিন্তু নির্মম বাস্তবতা হলো, আজই বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ সুন্দরবনে ভয়াবহ আগুন লেগেছে, যা নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কারণ, সেখানে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহার করার মতো পানি নেই!

    সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি এলাকায় সকালে স্থানীয়রা ধোঁয়া দেখতে পান এবং বিষয়টি বন বিভাগকে জানান। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, ঘটনাস্থলটি খালের পানির উৎস থেকে দুই কিলোমিটার দূরে হওয়ায় পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খাল থেকে পানি পাম্প করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু জোয়ার না আসা পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে, যা বনের জীববৈচিত্র্যের জন্য এক মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ ও সুন্দরবনের হুমকি

    সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এই বন বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, গত ২২ বছরে এখানে ২৫টিরও বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই পূর্ব সুন্দরবন এলাকায়। প্রতিবারই দাবানলের মতো আগুন ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু তা প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

    আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যায়—স্থানীয় মৌয়াল বা কাঠুরেদের অসাবধানতাবশত আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এছাড়া, মানবসৃষ্ট অন্যান্য কারণ, যেমন সিগারেটের আগুন, বন উজাড়ের কৌশল, কিংবা অবৈধ চাষাবাদের জন্য ইচ্ছাকৃত আগুন লাগানোর ঘটনাও এর পেছনে থাকতে পারে।

    পানি সংকট: আগুন নিয়ন্ত্রণের প্রধান বাধা

    এবারের আগুন নেভানোয় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পানি সংকট। সুন্দরবনের ভেতরে পর্যাপ্ত জলাধার নেই, খালগুলোর অনেক জায়গায় পানি শুকিয়ে গেছে, এবং যেসব খাল আছে, সেগুলোও আগুন লাগার স্থানের বেশ দূরে। ফলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সহজেই পানি সংগ্রহ করতে পারছেন না। যদি বন এলাকায় বড় জলাধার বা পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতো, তবে হয়তো আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো।

    বিশ্ব পানি দিবসের মূল বার্তাই হলো—নিরাপদ ও পর্যাপ্ত পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখছি, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন আগুনে পুড়ছে, আর পানির অভাবে তা নেভানো যাচ্ছে না! এটি শুধু সুন্দরবনের জন্য নয়, বরং সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি ভয়াবহ সংকেত।

    কি করা উচিত?

    ১. জরুরি পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা:

    সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কৃত্রিম জলাধার তৈরি করা যেতে পারে।

    নদী ও খালের পানি ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বাঁধ ও জলাধার তৈরি করা উচিত।

    ২. দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা:

    সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা দরকার, যাতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা নেভানোর ব্যবস্থা করা যায়।

    আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত বন কর্মী দল গঠন করা উচিত।

    ৩. বন সংরক্ষণে সচেতনতা:

    স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে অসাবধানতাবশত আগুন না লাগে।

    অবৈধ কাঠ কাটা ও বন উজাড়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা দরকার।

    ৪. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার:

    ড্রোন ও স্যাটেলাইট ব্যবহার করে আগুন লাগার ঘটনা দ্রুত শনাক্ত করা যেতে পারে।

    আগুন নেভানোর জন্য আধুনিক পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।

    উপসংহার

    বিশ্ব পানি দিবসে সুন্দরবনের এই আগুন আমাদের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা বহন করে। যদি আমরা এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিই, তবে একদিন হয়তো সুন্দরবনের অনেক অংশ আগুন ও পানির অভাবে বিলীন হয়ে যাবে। শুধু দিবস পালন করলেই হবে না, আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় বাস্তবসম্মত ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।

    লেখক: এফ এইচ সবুজ (পরিবেশ কর্মী)

    বিআলো/তুরাগ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    April 2025
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    282930