• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ভারতে নির্বাচনের পর বিজেপির অন্তর্কলহ এখন প্রকাশ্যে 

     dailybangla 
    07th Jun 2024 10:45 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল মঙ্গলবার (৪ জুন) ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এককভাবে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। কিন্তু বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট তিন শ আসন পর্যন্ত যেতে পারেনি। অন্যদিকে, দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে কংগ্রেসের উদ্যোগে গড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট।

    এবার দলের আসন এক ধাক্কায় ৩০৩ থেকে ২৪০–এ নেমে আসে। সরকার গঠন করতে গিয়ে শরিকদের গুরুত্ব দেয়া এবং উত্তর প্রদেশে ভোটে মুখ থুবড়ে পড়া— সব মিলিয়ে দলের ভেতরে টানাপোড়েন ও কলহ প্রকাশ্যে উঠে এসেছে। একে অন্যের প্রতি দোষারোপও চলছে। কোথাও নাশকতার অভিযোগও উঠেছে।

    ১০ বছর ধরে একের পর এক সাফল্য বিজেপির অভ্যন্তরের অনেক কিছুই প্রকট হয়নি। সরাসরি প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়নি, নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহর সিদ্ধান্ত ও কাজের ধরনকে।

    এদিকে, এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির ওপর ইতোমধ্যেই কোনো কোনো মহল চাপ সৃষ্টি করেছে। নতুন সরকারে যেন অমিত শাহ আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না পান। উত্তর প্রদেশের বিজেপির একটি বড় অংশ রাজ্যে ভরাডুবির জন্য অমিত শাহর দিকেই আঙুল তুলেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের নেতারা আবার ওই বিষয়ে দোষারোপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে।

    ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদি–শাহ জুটির প্রথম পছন্দ ছিলেন না যোগী আদিত্যনাথ। ওই রাজ্যের গাজীপুর থেকে নির্বাচিত মনোজ সিনহাকে দায়িত্ব দিতে তারা চেয়েছিলেন। যিনি ওই সময় ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। মনোজকে সে কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু বাধ সেধেছিল আরএসএস। সংঘের পছন্দই শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। মনোজকে পরে জম্মু–কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল করা হয়।

    সেই অর্থে যোগী আদিত্যনাথ কোনো দিন মোদি–শাহর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অংশ হননি। বরং দল ও রাজ্যের সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি বারবার স্বকীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। শুরু থেকেই দিল্লির সঙ্গে তার একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এবার ভোটের ফল প্রকাশের পর ভেতরের দূরত্বটা আরও প্রকট হয়। বাজে ফলাফলে দুই শিবিরের ঘনিষ্ঠজনেরা প্রকাশ্যেই একে অপরকে দোষ দিয়ে চলেছেন। অবস্থা সামাল দিতে প্রদেশ সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরীকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

    দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মোদি–শাহর সঙ্গে যোগীর তিক্ততার সম্পর্ক রাজনীতিকদের মধ্যে প্রথম প্রকাশ্যে আনেন।

    ভোটের প্রচারের সময় তিনি দুটি কথা বলেন। এক, নরেন্দ্র মোদি তার তৈরি নিয়ম মেনে ৭৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর দায়িত্ব দিয়ে যাবেন অমিত শাহর হাতে। দুই, একক ক্ষমতায় তৃতীয়বার সরকার গড়লে মোদি দুই মাসের মধ্যে সরিয়ে দেবেন যোগীকে, যেভাবে তিনি সরিয়ে দিয়েছেন রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজে, মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান, ছত্তিশগড়ে রমন সিংদের।

    এখন কথা হলো মোদির অবসর গ্রহণের বিষয়টি একটা কল্পনাপ্রসূত বিষয় বলে শাহ–নাড্ডারা উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু যোগী নিয়ে দলের কেউ একটি শব্দও বলেননি।

    ভোটের প্রচারে দুই পক্ষের এই টানাপোড়েনের কাহিনি গোটা রাজ্যে চোরা স্রোতের মতো বয়েছে। ফল অস্বাভাবিক খারাপ হওয়ায় এখন তা আর মোটেই গোপন নেই। যোগীর অনুগামী স্থানীয় নেতারা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অমিত শাহকে। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওতে তারা বলছেন, অযোগ্যদের তিনি খেয়ালখুশিমতো প্রার্থী করেছেন। প্রার্থীপদ কেনাবেচা করেছেন। এমনকি এই অভিযোগও করা হচ্ছে, শাহ নাকি প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন কেন্দ্র বারানসিকে তুলে দিয়েছেন গুজরাটি ব্যবসায়ীদের হাতে। এর পাল্টা মোদি–শাহ গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠরা দোষী ভাবছেন যোগীকে। অভিযোগ, যোগী হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। যোগী নাকি চাননি ২০১৯ সালের মতো জনাদেশ নিয়ে মোদি ফের রাজত্ব করুন।

    মোদি দুটি কেন্দ্রে বিপর্যস্ত হয়েছেন এবার। একটি তার নিজের কেন্দ্র বারানসি, যেখানে প্রথম তিন রাউন্ড গণনায় মোদি পেছিয়ে ছিলেন। পরে জেতেন মাত্র দেড় লাখের ব্যবধানে। যেখানে ২০১৯–এ তার জয়ের ব্যবধান ছিল প্রায় পাঁচ লাখ। দ্বিতীয় কেন্দ্রটি অযোধ্যা, যেখানে বিজেপি প্রার্থীকে হার মেনে নিতে হয়েছে সমাজবাদী প্রার্থীর কাছে। মোদি–শিবির এই বিপর্যয়ের দায় চাপাচ্ছে যোগীর ওপর। যোগী–শিবিরের পাল্টা দাবি, অযোধ্যার পুরো ভার তুলে দেয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রিন্সিপ্যাল সচিব নৃপেন্দ্র মিশ্রকে। বারানসির দায়িত্বে ছিলেন অমিত শাহ। দুই ক্ষেত্রের কোথাও যোগীর কোনো ভূমিকা ছিল না।

    ভোট পরিচালনায় ভুল-ত্রুটির এই দুই কেন্দ্রের বিপর্যয়ের একমাত্র কারণ নয়। অন্য কারণ হিসেবে উন্নয়নের নামে দুই জায়গাতেই সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য দুই কেন্দ্রে যাদের উৎখাত করা হয়েছে, উপযুক্ত ক্ষতি পূরণের অভাবে তারা সবাই বিরোধিতার দিকে গেছেন। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে এই মানুষজন তাদের ক্ষোভ ঝেড়েছেন।

    যারা হেরেছেন, তাদের অধিকাংশের অভিযোগ অন্তর্দলীয় কলহের। কেউ কেউ মনে করছেন, গুজরাট ও রাজস্থানে রাজপুত–ক্ষত্রিয় উষ্মায় হাওয়া দিয়েছেন ঠাকুর বংশীয় যোগী। উত্তর প্রদেশের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে বিজেপির ফল তাই এত খারাপ হয়েছে।

    শেষ পর্যন্ত, সরকারে অমিত শাহর গুরুত্ব হ্রাস করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। নির্বাচনী ধাক্কা সংঘকে যেমন সচকিত করেছে, তেমনই জোটবদ্ধ হচ্ছে বিজেপির শাহবিরোধী মহল।

    বিআলো/শিলি

    এই বিভাগের আরও খবর
     

    ফরহাদ হত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    July 2025
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    28293031