ভালুকায় হিন্দু শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন, তদন্তে প্রশাসন
বিআলো ডেস্ক: ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে কেন্দ্র করে এক পোশাকশ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা ও তাঁর মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ব্যাপক নিন্দা ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এ ঘটনাকে নৃশংস সহিংসতা উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া ডুবালিয়াপাড়া এলাকায়। নিহত দিপু চন্দ্র দাস (২৭) পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারখানার ভেতরে এক শ্রমিক দিপুর বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তোলেন। অভিযোগটি ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীরা দিপুকে কারখানার বাইরে পাঠিয়ে দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁকে মারধর করে হত্যা করে। পরে কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকে তাঁর মরদেহে আগুন দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাত পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করেন। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই তপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, ধর্ম অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে এখনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই এবং জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ইসলাম কখনোই বিচারবহির্ভূত হত্যা বা গণপিটুনিকে সমর্থন করে না এবং অভিযোগ থাকলে তা আইনের মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।
বিআলো/শিলি



