মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় পিছিয়ে যাচ্ছে দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একটি দেশে নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষ করে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও জবাবদিহিমূলক সরকারের জন্য যেখানে ২০০০ সালে স্কোর ছিল ৪৪ পয়েন্ট সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে বর্তমানে ১২ পয়েন্টে এসেছে । দেশ উন্নতির বিপরীতে হাঁটছে। স্বার্থে অবনতির দিকেই দেশের উন্নয়নের সরকার ১৯৪৮ সালের ১৯ নং অনুচ্ছেদ বাস্তবায়ন করা মুক্ত এবং জরুরি। তাহলেই মানুষ মতপ্রকাশ করতে পারবে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় একটি সম্মানজনক জায়গায় থাকবে নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ব্যবস্থা করে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।
গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে সরকার তার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ। সুতরাং সেই দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মত প্রকাশের অধিকার কিংবা মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার কেবল কিছু ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। সেটি বরঞ্চ রাষ্ট্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় সকল ক্ষেত্রে। জনগণ সরকার ব্যবস্থা, সরকারের সামরিক নীতি ও আর্মড ফোর্স সম্বন্ধে মতামত প্রকাশ করতে পারবে। যেহেতু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নীতিই হলো গভর্নমেন্ট ফর পিপল। আর্টিকেল নাইনটিনের বৈশ্বিক মতপ্রকাশ রিপোর্ট-২০২৪ এ মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় সারা বিশ্বে ১২৮তম হয়েছে বাংলাদেশ। মতপ্রকাশে বাংলাদেশের স্কোর ১২। এর আগে ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩০তম।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকটজনক। ২০১৮-২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মতপ্রকাশের স্কোর আটকে আছে ১১ ও ১২ এর মধ্যে। ১০ বছরে বাংলাদেশের স্কোর কমেছে ৮ পয়েন্ট, দুই যুগে কমেছে ৩২ পয়েন্ট। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪৪। স্কোর অনুযায়ী, ০-১৯ স্কোর সংকটজনক, ২০-৩৯ অতিবাধাগ্রস্ত, ৪০-৫৯ বাধাগ্রস্ত, ৬০-৭৯ স্বল্প বাধাগ্রস্ত ও ৮০-১০০ মুক্ত। আর্টিকেল নাইনটিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪টি দেশে মতপ্রকাশ অতি বাধয়্যন্ত, ২৫টি দেশে বাধাগ্রস্ত, ৩৫টি দেশে স্বল্প বাঁধাগ্রস্ত ও মতপ্রকাশের মুক্ত শ্রেণিতে রয়েছে ৩৮টি দেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫টি সূচকের মধ্যে সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের স্কোর সম্পূর্ণ ঋণাত্মক।
২০০৯ সাল থেকে আটটি সূচকেই ক্রমাগত খারাপ করে বাংলাদেশ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেন্সরশিপে। ধর্ম পালন ও নারী পুরুষের আলোচনায় স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ইতিবাচক। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও অ্যাকাডেমিক-সাংস্কৃতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্কোরে। ১৯৪৮ সালে মানবাধিকার সনদে ১৯ নং অনুচ্ছেদ সংযোজিত হয়। যেখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেকের অধিকার আছে নিজের মতামত এবং অভিব্যক্তি প্রকাশ করার। এই অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে নিজের স্বাধীনচেতায় কোনো বাধা ব্যতীত অটল থাকা, পুরো বিশ্বের যে কোনো মাধ্যম থেকে যে কোনো তথ্য অর্জন করা বা অন্য কোথাও সে তথ্য বা চিন্তা আপন করার অধিকার।
তথ্যে অনুসারে বাংলাদেশের মতপ্রকাশের অবস্থান হতাশা জজনক। যেখানে ২০০০ সালে স্কোর ছিলো ৪৪ পয়োন্ট সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে বর্তমানে ১২ পয়েন্টে এসেছে। দেশ উন্নতির বিপরীতে অবনতির দিকেই হাঁটছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকার ১৯৪৮ সালের ১৯ নং অনুচ্ছেদ বাস্তবায়ন করা জরুরি। তাহলেই মানুষ মুক্ত মতপ্রকাশ করতে পারবে এবং বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় একটি সম্মান জনক জায়গায় থাকবে।
বিআলো/তুরাগ