মরুভূমিতে সোনায় পরিপূর্ণ জাহাজের অবশিষ্টাংশ আবিষ্কার!
dailybangla
01st Feb 2025 9:45 pm | অনলাইন সংস্করণ
আমরা সকলেই হয়তো ছোটবেলায় শুনেছি গুপ্তধন প্রাপ্তির গল্প। কিন্তু তা যে কেবল নিছক গল্প নয় বাস্তবেও সম্ভব। এমনই এক আশ্চর্যজনক ঘটনার সাক্ষী হল বিশ্ববাসী। সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার মরুভূমিতে সোনার মুদ্রায় পরিপূর্ণ একটি জাহাজের সন্ধান মিলেছে। এই জাহাজটিতে অক্ষত অবস্থায় দুই হাজার খাঁটি সোনার মুদ্রা এবং কয়েক হাজার পাউন্ড ধাতুপিণ্ড পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে এটি সারা বিশ্বে সারা ফেলেছে এবং অন্যতম রোমাঞ্চকর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারে পরিণত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকগণ ধারণা করছেন যে, এটি একটি পর্তুগিজ জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। এর নাম ‘বম জেসাস’ বা ‘দ্য গুড জিসাস’।
‘বম জেসাস’ হলো সাব-সাহারান আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে আবিষ্কৃত প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মূল্যবান জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। জাহাজটি ছিল পর্তুগিজ এবং স্প্যানিশ জাহাজগুলির চেয়ে বড়, আরও দক্ষ এবং আরও টেকসই। অনুমান করা হয় যে, জাহাজটি ১৫৩৩ সালের ৭ই মার্চ পর্তুগালের লিসবন থেকে যাত্রা করে ভারতের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু জাহাজটি পথিমধ্যে প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়ে। তীরের কাছাকাছি পৌঁছানো সত্ত্বেও জাহাজের হুলটি একটি পাথরের সাথে ধাক্কা খাওয়ায় জাহাজটি ডুবে যায়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে নামিবিয়ার মরুভূমিতে হীরা খনির অভিযানের সময় ‘বম জেসাস’ এর অবশিষ্টাংশ আবিষ্কৃত হয়েছিল। এর আগ পর্যন্ত জাহাজটি সকলের অজানা ছিল। উপকূলরেখার জল কমে যাওয়ার সাথে সাথে ‘বম জেসাস’ মরুভূমিতে আবির্ভূত হয়। জাহাজটি যেখানে পাওয়া গিয়েছিল তার আশেপাশে মানুষের হাড়ের বিক্ষিপ্ত অংশও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। জাহাজটি ছিল সোনা দিয়ে বোঝাই করা। এর থেকে প্রাপ্ত মুদ্রাগুলিই নির্দেশ করে এটি ১৫৩৩ সালে অদৃশ্য হওয়া সেই ‘বম জেসাস’।
প্রত্নতাত্ত্বিক ডঃ নলি বলেন, “জাহাজটিকে সোনা দিয়ে বোঝাই করার ধারণায় এটি নতুন অর্থ যোগ করে।” জাহাজটি থেকে সোনা ছাড়াও রৌপ্য মুদ্রা, তলোয়ার, জ্যোতির্বিদ্যার সরঞ্জাম, ক্যানন, কম্পাস, ব্রোঞ্জের বাটি এবং ধাতব খুঁটিও পাওয়া গিয়েছে। জাহাজটি যে অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছিল তাকে বলা হয় ‘স্পারর্গবিয়েট’ বা ‘নিষিদ্ধ অঞ্চল’।
বর্তমানে এই অঞ্চলে ধ্বংসাবশেষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এখানে একটি জাদুঘর নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনাও করা হয়েছে।
লেখক: আয়শা আক্তার
বিভাগ: ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়