মামলাজট কমাতে দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধনের কাজ চলছে: আইনমন্ত্রী
বিআলো প্রতিবেদক: বিচার প্রক্রিয়া সহজতর করে মামলাজট কমিয়ে আনতে ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি যুগোপযোগী করে সংশোধনের কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
৪ জুন, মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আইন ও বিচার বিভাগের উদ্যোগে এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় গৃহীত প্রকল্প ‘ডেভেলপমেন্ট অব মেডিয়েশন এন্ড সিভিল লিটিগেশন প্র্যাকটিসেস ফর এনহেন্সমেন্ট অব এক্সেস টু জাস্টিস’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জনগণের ন্যায়বিচারে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি ‘ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ’ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সকল নাগরিকের ন্যায়বিচারের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে সারাদেশে লিগ্যাল এইড অফিস প্রতিষ্ঠা, সরকারি খরচে আইনি সহায়তা কার্যক্রম চালু, বিচার প্রক্রিয়ায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রবর্তনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে আরো সফল ও কার্যকর করতে বিভিন্ন আইন ও বিধিবিধান সংশোধন করা হয়েছে। উন্নত মেডিয়েশন চর্চার জন্য জাইকার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ‘ডেভেলপমেন্ট অব মেডিয়েশন এন্ড সিভিল লিটিগেশন প্র্যাকটিসেস ফর এনহেন্সমেন্ট অব এক্সেস টু জাস্টি’ শিরোনামে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি মধ্যস্থতা কার্যক্রমকে উন্নত করার মাধ্যমে নাগরিকদের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে এবং দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্বের কারণ যথাযথভাবে চিহ্নিত ক্রমে তা দূরীকরণে সহায়ক হবে।
মন্ত্রী জানান, প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির এই প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ এবং জাপানে মেডিয়েটর, বিচারক এবং লিগ্যাল এইড অফিসারদের দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷
বাংলাদেশে ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধিতে এই প্রকল্প একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে উল্লেখ করে মি. হক বলেন, পাইলট জেলা হিসেবে নরসিংদী ও কুমিল্লায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে, যেখানে মেডিয়েটর (মধ্যস্ততাকারী) এবং লিগ্যাল এইড অফিসারদের প্রশিক্ষণ ও কার্যকর কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হবে। প্রকল্পের অধীন মেডিয়েশনকে বিরোধ নিষ্পত্তির জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সকল পর্যায়ে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করা হবে৷
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানী রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরি। অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) উম্মে কুলসুম, প্রকল্পের চিফ এডভাইজার (এক্সপার্ট) ফুজিওকা টাকুরো। অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগ, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিআলো/শিলি