• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    মিস ফায়ারেই কি প্রাণ গেলো শিশু আহাদের? 

     dailybangla 
    29th Jul 2024 11:14 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ইবনে ফরহাদ তুরাগঃ ১৯ জুলাই বিকেল ৪টা। রাজধানীর রায়েরবাগ আবাসিক এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের ব্যপক সংঘর্ষ চলছিল। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ আর গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘুম ভেঙে যায় শিশু আহাদের। নিঃস্পাপ শিশুটি ছুটে আসে বারান্দায়। সাথে আসেন তার মা-বাবাও। এক পাশে বাবা, আরেক পাশে মা, মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল ছোট্ট আহাদ। সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে।

    একপর্যায়ে একটি গুলি এসে তার ডান চোখ দিয়ে ঢুকে মাথার ভেতর আটকে যায়। মুহূর্তেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে আহাদ। পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। রক্তাক্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসেন শিশুটির বাবা হাসান। এ সময় অস্ত্রধারীরা এগিয়ে এসে তাঁকে বাধা দেয়। পরে ছেলের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে তারা সরে দাঁড়ায়।

    গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন রায়েরবাগ আবাসিক এলাকার মেরাজনগর বি-ব্লক এর ‘শান্তি নিবাস-২’ নামে একটি ভবনের ৮ তলায় মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে।

    ভবনটির ফ্ল্যাট মালিক শেখ ফরিদ বলেন, ১১ তলা এই বাড়িটির আটতলায় ভাড়া থাকেন আবুল হাসান, তাঁর স্ত্রী সুমি আক্তার, বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আব্দুল আহাদ (০৪)।আবুল হাসানের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে। তিনি আয়কর বিভাগের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন।

    শিশু আহাদের বাবা আবুল হাসান দৈনিক বাংলাদেশের আলো-কে বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ও লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসকরা জানান, গুলি মাথার মধ্যে আছে। কিন্তু কোন অবস্থানে আছে, তা বোঝার জন্য সিটিস্ক্যান করতে হবে। কিন্তু সিটিস্ক্যান করতে নেওয়া হলে আইসিইউর যন্ত্রপাতি খুলে ফেলতে হবে। এতে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারে। তবে সিটিস্ক্যান করাও জরুরি।

    পরেরদিন শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আহাদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বেলা ৩ টার দিকে আহাদের মরদেহটি তারা বুঝে পান। তারপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গার পুখুরিয়া গ্রামে চলে যান। সেদিন বাদ মাগরিব পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় শিশু আহাদকে। ‘বাড়িতে আগে পারিবারিক কবরস্থান ছিল না। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো’ আবেগভরা কণ্ঠে কথাগুলো বলেন তিনি।

    এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবুল হাসান বলেন, ‘‘সবকিছু যেন চোখের পলকে ঘটে গেল। আমার আদরের ছোট ছেলেকে হারালাম। এ নিয়ে আর কী বলব!’ চেয়েছিলাম পোস্টমর্টেম না করতে। অতটুকু শরীর যাতে আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। কিন্তু আমাদের সে চেষ্টাও সফল হয়নি।” আমার সকলের কাছে একটাই বার্তা, ‘আমার বাচ্চাটির জন্য আপনারা দোয়া করবেন’।

    কদমতলী থানার ওসি আবুল কালাম এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ওই সময় বাসার আট তলার বেলকনিতে দাঁড়িয়ে মা ও বাবার সাথে বাহিরের সংঘর্ষ দেখছিল চার বছরের শিশু আহাদ। এ সময় দূর্বিত্তদের করা একটি গুলি এসে শিশুটির চোখে লাগে। সাথে সাথেই তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর একদিন পর শিশুটির মৃত্যুর খবর আসে। এ ব্যপারে পুলিশ বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

    শিশু হত্যাকান্ডের পর সেই ভবনে যাওয়া প্রাথমিক তদন্তকারী কর্মকর্তা কদমতলী থানার এস.আই জাহান বলেন, ঘটনার সময় আমাদের পুলিশ থানায় ছিলো, সেই রাস্তায় তখন কোনো পুলিশ ছিলো না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটি মিস ফায়ার হতে পারে। তবে, কোন দিক থেকে গুলি এসে বাচ্চাটির চোখে লাগলো! এ ব্যপারে তদন্ত চলছে।

    বিআলো/নিউজ

    এই বিভাগের আরও খবর
     

    ফরহাদ হত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    July 2025
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    28293031