• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    মুক্তিযুদ্ধের অর্জন রক্ষায় গেরিলা যোদ্ধাদের শপথ গ্রহণ 

     dailybangla 
    14th Dec 2025 1:55 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    বিশেষ প্রতিনিধি: মহান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে সমুন্নত রাখতে নতুন করে শপথ নিয়েছেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা যোদ্ধারা। গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মিলিত হয়েছিলেন একাত্তরের বীর গেরিলা যোদ্ধারা। এই মিলনমেলায় অংশ নেন শহীদ পরিবারের সদস্যরাও। তারা সমস্বরে অঙ্গীকার করেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে ধ্বংস হতে দেব না, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না এবং ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়াব। তাঁরা নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস ও চেতনায় সংগঠিত করার প্রত্যয় প্রকাশ করেন।

    জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন গেরিলা যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। মিলনমেলায় আলোচনার পাশাপাশি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠিসহ অন্যান্যরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশ করে। এছাড়া মিলনমেলার আয়োজনে শহীদ মিনার চত্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।

    ঘোষণাপত্রে বলা হয়, মিলনমেলার আয়োজনের উদ্দেশ্য কেবল স্মৃতিচারণা নয়, এটি গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্তির সংগ্রামের নব সূচনা। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও চেতনার আলোকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সংহত করার বার্তাও দেওয়া। একইসঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে লড়াই জোরদার করা। ঘোষণাপত্রে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। ঐতিহাসিক সেই সময়ের জনযুদ্ধ কেবল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সেনা-মুক্তিবাহিনীর একক সাফল্য ছিল না, এটি ছিল সর্বজনীন জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ, ত্যাগ ও আত্মত্যাগে গড়ে ওঠা সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগ্রাম। যে সংগ্রামে সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারতসহ গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সমর্থন ছিলো। তাদের কারণেই আমেরিকার সামরিক হস্তক্ষেপের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
    গণমানুষের ত্যাগ এবং নেতা ও দলের সমন্বিত নেতৃত্বকেই মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মূল চালিকা শক্তি অভিহিত করে মুজাহিদুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশাপাশি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, কমরেড মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফফর আহম্মদ, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো নেতাদের অবদান স্মরণ করেন।
    তিনি বলেন, একাত্তরে বিজয় অর্জনের পরও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অর্জন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। বরং রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস ও চেতনার আলোকে মানবমুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে।

    মিলনমেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মিজানুর রহমান ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর বেতিয়ারা গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সংঘটিত যুদ্ধের স্মৃতিচারণা করেন। সেই যুদ্ধে ১১ জন সহযোদ্ধাকে হারানোর কথা বলেন তিনি। যুদ্ধের প্রস্তুতি, অবস্থান ও সংঘর্ষের মুহূর্তগুলোর বর্ণনাও তিনি দেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের সব সংগ্রামই বীর শহীদদের ত্যাগ ও গণমানুষের সাহসিকতার ফল।

    অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন গেরিলা কমান্ডার ও সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার ও সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মো. শাহ আলম, খুলনা আঞ্চলিক কমান্ডার ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম এ সবুর, সিপিবি নেতা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, কামরুজ্জামান ননী, আনোয়ারুল হক, অধ্যক্ষ আবু হোসেন, অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, ডা. তপন বসু, আবু মোহাম্মদ জুলফিকার প্রমূখ।

    উল্লেখ্য, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা। স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    293031