মোদির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে জনগণ: রাহুল গান্ধী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জয় এখনও আসেনি। কিন্তু ২০২৪ লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-তথা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ফলাফল যা এসেছে, তা কার্যত ঐতিহাসিক। যেভাবে চারশো আসন পার করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করে আসছিল বিজেপি, তাকে কার্যত দুরমুশ করে প্রায় ২৩২ আসনে এগিয়ে ইন্ডিয়া জোট। একা কংগ্রেস এগিয়ে ৯৯ আসনে। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী যেখানে মাত্র দেড় লক্ষ ভোটে জিতলেন, সেখানে রাহুল গান্ধী রায়বরেলি ও ওয়েনাড় দুই আসনেই সাড়ে তিন লক্ষ ভোটের বেশি ব্যবধানে জয়ী।
নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নিজের খুশি আর লুকোতে পারলেন না রাহুল গান্ধী।
জয়রাম রমেশ, সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও সোনিয়া গান্ধীকে পাশে বসিয়ে রাহুল বললেন, ‘জোট যেখানেই লড়েছে, সবাই এক হয়ে লড়েছে। কংগ্রেস স্বচ্ছতার সঙ্গে ভারতকে একটা নতুন দিক নির্দেশ করতে পেরেছে। যে নির্দেশ একইসঙ্গে গরিবদরদী ও উৎপাদনমুখী। আমাদের লড়াই ছিল সংবিধান বাঁচানোর। আমাদের লড়াই ছিল গরিবদের পাশে থাকার। আপনারা আদানির স্টকের অবস্থা দেখেছেন তো? এ কী অদ্ভুত অবস্থা! জনতা মোদীজির সঙ্গে সরাসরি আদানিজিকে সম্পর্কিত করে দিয়েছেন। মোদীজির হার মানেই স্টক মার্কেটে আদানিজির পতন। এ’ এক সরাসরি সম্পর্ক, দূর্নীতির সম্পর্ক। দেশ নরেন্দ্র মোদীকে সাফ বলে দিয়েছে, আমরা আপনাকে চাই না। এটাই এই নির্বাচনের মূল কথা।’
উত্তরপ্রদেশে কার্যত বিজেপির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে টক্কর দিয়েছে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটসঙ্গী সমাজবাদী পার্টি। বিজেপির ৩৩ আসনের পাল্টা সমাজবাদী পার্টি এখন অবধি এগিয়ে ৩৭ আসনে। যে রামমন্দির নিয়ে এত হইচই, সেই রামমন্দিরের কেন্দ্র ফৈজাবাদে বিজেপির লাল্লু যাদবকে হারিয়ে দিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির অবধেশ প্রসাদ। রাহুল নিজে রায়বরেলি থেকে জিতেছেন। অমেঠিতে ধরাশায়ী স্মৃতি ইরানি। সুলতানপুরে হেরে গিয়েছেন মানেকা গান্ধী। খোদ নরেন্দ্র মোদীর জয়ের ব্যবধান উল্কার মত কমেছে। দৃশ্যতই স্বস্তিতে রাহুল।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ভোটের ফলাফল এটাই বলে যে, জনতা বলে দিয়েছে, আমরা মোদীজি ও অমিত শাহ যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন, সেটা পছন্দ করি না, ওঁরা যেভাবে সংবিধানকে আক্রমণ করেছে, আমরা সেটা পছন্দ করি না। এটাই সবচেয়ে বড় বার্তা। আমি সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি খুব গর্বিত। দেশের মানুষের জন্য আমার গর্বের সীমা নেই। যেভাবে তাঁরা রুখেছেন বিজেপিকে ও রক্ষা করেছেন সংবিধানকে। আমি এটাই বলতে চাই, সংবিধানকে বাঁচানোর কাজ আজ হিন্দুস্তানের গরিবরা করেছেন। দেশের কৃষকরা বাঁচিয়েছেন, দেশের শ্রমিকরা বাঁচিয়েছেন। আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া মানুষরাই এই সংবিধানকে বাঁচিয়েছেন। তাঁরাই আজ জিতলেন। আমি তাঁদেরই ধন্যবাদ জানাতে চাই। কংগ্রেস আপনাদের জন্য আছে। যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি, তা আমরা রাখবই।’
এখনই ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলতে রাজি হলেন না রাহুল। বললেন, যা বলার জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা করেই করবেন। ‘আমাদের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। সেটা আগামীকালই হবে। ঠিক কীভাবে আমরা আগামীর পথে চলব, সেটা শরিকদের মত না নিয়ে বলা সম্ভব নয়। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার আগেই আমি একতরফা সেসব তো বলে দিতে পারি না। সব আগামীকাল সিদ্ধান্ত হবে। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে, সেটাই মেনে চলব।’
বিআলো/শিলি