যাত্রাবাড়ীতে রহস্যজনক ছুরিকাঘাতে গর্ভের সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সীমা আক্তার (২২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গর্ভে থাকা তার সাত মাসের সন্তানও মারা গেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার শহীদ জিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনে একটি বাসায় দুর্বৃত্ত ঢুকে সীমা আক্তারকে ছুরিকাঘাত করে। পরে ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।রাতে সিজারে সীমা আক্তারের একটি সন্তান জন্ম হয়। পরে রাতেই ওই নবজাতকটি মারা যায়। আর বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সীমা আক্তারের মৃত্যু হয়।
নিহত সীমা আক্তারের স্বামী জুয়েল জানান, আমার স্ত্রী গতকাল তার বাবার বাসায় যায়। বাবার বাসায় অবস্থানের সময় হঠাৎ একটি যুবক হাতে ধারাল অস্ত্র নিয়ে বাসায় ঢুকে পড়ে। আমার স্ত্রী ওই যুবককে মিনতি করে বারবার বলে, সে অন্তঃসত্ত্বা তাকে যেন না মারা হয়। ওই যুবক কোনো পাত্তা না দিয়ে আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। স্ত্রী ও সন্তানকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।
নিহত সীমা আক্তারের ভাই নাসির বলেন, সীমা তার স্বামী জুয়েলকে নিয়ে আমাদের বাসার কাছাকাছি ভাড়া বাসায় থাকে। জুয়েল যাত্রাবাড়ী মোড়ে ফলের ব্যবসা করে। মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসত। আমার বোনের চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গতকাল আমার বোন আমাদের বাসায় অবস্থান করছিল। এক যুবক ছুরি হাতে গত রাতে আমাদের বাসার ভেতরে ঢুকে পড়ে। সে সময় আমার বোন ও তার চার বছরের সন্তান বাসায় ছিল। দুর্বৃত্ত যুবক কিছু না বলেই ধারাল অস্ত্র নিয়ে আমার বোনের দিকে তেড়ে যায়। তখন সীমা বলে আমাকে মারবেন না, আমার পেটে সন্তান আছে। সীমার কথা না শুনেই পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তবে, ওই যুবককে চিনতে পারেনি সীমা।
তিনি আরও বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত সীমাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সিজার করেন চিকিৎসকরা। সীমার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সদ্য ভূমি হওয়া সন্তানটির বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। সে সময় চিকিৎসকদের পরামর্শে এনআইসিইউতে নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ঢামেকে এনআইসিইউ ফাঁকা না থাকায় অন্য হাসপাতালে নেওয়ার সময় রাতেই মারা যায় ভূমিষ্ঠ হওয়া আহত নবজাতকটি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ছুরিকাঘাতে আহত এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সেদিন রাতেই সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া নবজাতকটি মারা যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলের দিকে মারা যান নবজাতকের মা। মা ও শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
বিআলো/শিলি