রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়নি
সংসদ প্রতিবেদক: বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কখনোই শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়নি। তবে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এমএফএন নীতির আলোকে গার্মেন্টস পণ্যের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক হার বাংলাদেশ ও অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর জন্য অভিন্ন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধার আওতায় থাকাকালীন গার্মেন্ট পণ্য এর আওতা-বহির্ভূত ছিল। এ সুবিধা ব্যতিরেকেই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির একক বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তাদের জিএসপি পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তন করেনি।
মন্ত্রী বলেন, জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালু হলে তাতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি এবং সেক্ষেত্রে গার্মেন্ট পণ্যকেও জিএসপির আওতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাৎসরিক বাণিজ্য সংলাপেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে এ দাবি উত্থাপন করা হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা তুলা দিয়ে উৎপাদিত গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবিও বাংলাদেশ সরকার উত্থাপন করেছে। কোনো বিশেষ আঞ্চলিক চুক্তি বা সহায়তা কার্যক্রম, যেমন- ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্রগুলোর জন্য ক্যারি- বিয়ান বেসিন ইনিশিয়েটিভ (সিবিআই) কিংবা সাব-সাহারান রাষ্ট্রগুলোর জন্য আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপচুনিটি অ্যাক্টের (এজিওএ) মতো বিশেষ ব্যবস্থা অথবা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আওতা ছাড়া কোনো দেশই সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না।
৯ দেশে নতুন কূটনৈতিক মিশন হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশে বাংলাদেশের ৮৪টি কূটনৈতিক মিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি মিশনের কার্যক্রম চালু আছে। এর মধ্যে ৪৭টি দূতাবাস, ১৪টি হাইকমিশন, ১২টি কনস্যুলেট, তিনটি স্থায়ী মিশন, চারটি উপ-হাইকমিশন এবং চারটি সহকারী হাইকমিশন। নতুন করে নয়টি দেশে নয়টি কূটনৈতিক মিশন স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটন, আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন, আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরেস, নরওয়ের রাজধানী অসলো ও কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে নতুন করে বাংলাদেশ মিশন স্থাপন করা হবে। এছাড়া চীনের গুয়াংজো, ব্রাজিলের সাওপাওলো, জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট ও মালয়েশিয়ার জোহর বাহরুতে সাব-মিশন স্থাপন করা হবে।
বিআলো/তুরাগ