রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, আটক ২০
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুর ১০, ইসিবি চত্বর ও ধানমন্ডির স্টার কাবাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে তাদেরকে আটক করা হয়ে। এ সময় ইসিবি চত্বরে জড়ো হওয়া একদল শিক্ষার্থীকে লাঠিপেটা করে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণার পর আজ রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ক গতকাল রবিবার এক ভিডিও বার্তায় শিক্ষার্থীদের চলমান কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এরপরই অন্য সমন্বয়কদের মধ্যে কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে এই আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ ঢাকার আটটি স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে বলে জানানো হয়েছিল। এই আট স্থান হচ্ছে- সায়েন্স ল্যাব, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেট, প্রেসক্লাব, উত্তরার বিএনএস সেন্টার, মিরপুর–১০, মিরপুরের ইসিবি চত্বর, রামপুরা ও মহাখালী।
আজ সকাল থেকেই এসব এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) হেলিকপ্টারের টহলও দেখা গেছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় মিরপুর ১০ নম্বরের গোলচত্বর থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির। ধানমন্ডির স্টার কাবাবের সামনে থেকে ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছেন নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইসিবি চত্বরে দায়িত্বরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, কয়েকজন বিক্ষোভকারী গলি থেকে ইটপাটকেল ছুড়ছিল। পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে ও কয়েকজনকে আটক করেছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশে এখন পর্যন্ত ২১০ জনেরও বেশি আন্দোলনকারী এবং শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের দাবি- এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্য ও সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ এবং তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় এসব আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি তাদের।
এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বাতিল চেয়ে আন্দোলনে নামে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন তীব্র হতে থাকলে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকার সমর্থকরা। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মামলা হয়। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে।
বিআলো/শিলি