রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতা ও শ্রম পরিবেশের অনিশ্চয়তা-এই সবকিছুকে পেছনে ফেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ আশাব্যঞ্জক রপ্তানি আয় করেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৪৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার (৯.৭৩% প্রবৃদ্ধি) এবং ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার (৭.৮২% প্রবৃদ্ধি)।
বছরের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ সংঘটিত হয়। সে সময় দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল, বন্ধ ছিল পোশাক কারখানাও। এরপর ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর তিন দিন রাষ্ট্র ছিল কার্যত সরকারহীন। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রমে দেখা দেয় ব্যাঘাত।
তবুও রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর পরিচালক ফয়সাল সামাদ। তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর স্থিতিশীল পরিবেশে ক্রেতারা বিপুল পরিমাণ কার্যাদেশ দিয়েছিল। সেই অর্ডারগুলোর অনেকটাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হয়েছে। আগস্টের পর পরিস্থিতির উন্নতি হলে রপ্তানির গতি বাড়ে।
তবে জুন মাসে এসে রপ্তানিতে ধীরগতির চিত্র ফুটে উঠেছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।
ফয়সাল সামাদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় নতুন কার্যাদেশ আসা কমে গিয়েছিল। যার প্রভাব এখন পড়তে শুরু করেছে। আগামী অর্থবছরে এর প্রভাব আরও প্রকট হতে পারে।
বিআলো/এফএইচএস