লালমনিরহাটে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১২
সজীব আলম, লালমনিরহাট: লমনিরহাটের বাস মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় দুই সাংবাদিক ও এক পুলিশ সদস্য সহ শ্রমিকদের দুই গ্রুপের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। রোববার (৮ই ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানায়, লালমনিরহাট জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব নিয়ে দু’টি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষ সংগঠনের পুরনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার (২৪৯৩) বহাল রাখার দাবি এবং বহিরাগত শ্রমিক ও দ্বৈত শ্রমিক দ্বারা প্রচলিত শ্রম আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি ওমর ফারুক বাবলু। অপর পক্ষ শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রাখে। যার নেতৃত্ব দেয় মাহফুজার ও বকুল ড্রাইভার।
শ্রমিক নেতা বাবলু জানায়, গত ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকেই মাহফুজার, বকুলসহ বেশ কিছু শ্রমিক আওয়ামী দোসরদের সাথে নিয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে দ্বৈত শ্রমিক দ্বারা বহিরাগত শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চালায়। এর প্রতিবাদে আজ রোববার সাধারণ নিবন্ধিত শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী একটি মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলটি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া মাহফুজার, বকুল ড্রাইভার ও তাদের সহযোগীরা আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করে সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায় বিচার পেতে শ্রমিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আহবান করে বক্তব্য দেন শ্রমিকরা।
তবে ইটপাটকেল ছুড়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে অপর পক্ষটি। তাদের দাবি বাবলুর নেতৃত্ব দেওয়া মিছিল থেকেই বাস টার্মিনালে থাকা শ্রমিকদের উপর ঢিল ছোঁড়া হয়। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বাস স্ট্যান্ডে থাকা শ্রমিকরা নতুন করে শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছিলো বলেও জানান তারা।
সংঘর্ষে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত সাংবাদিক এসআর শরিফুল ইসলাম রতন বলেন, শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ভিডিও ধারন করার সময় আমাকে ও ডেইলি বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্নার উপর হামলা চালায় একটি পক্ষ। সাংবাদিকের উপর হামলা করার বিষয়টি নিয়ে ভিডিও দেখে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও তিনি বলেন ।
তবে এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আব্দুল কাদের বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শ্রমিকদের একটি গ্রুপ প্রতিবাদ মিছিল ও আরেকটি পক্ষ সমাবেশ করছিলো। উভয় পক্ষই বাস টার্মিনাল এলাকায় মুখোমুখি হলে প্রথমে ইটপাটকেল ছোঁড়ার ঘটনা ও পরে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার হয়। এতে একজন পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিআলো/শিলি