• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    লালমাই পাহাড়ে দেশের প্রথম ‘ফরেস্ট মিউজিয়াম’—বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের অভয়াশ্রমে নতুন সম্ভাবনা 

     dailybangla 
    06th Nov 2025 2:47 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: সবুজে মোড়ানো লালমাই পাহাড়ের ভাঁজে গড়ে উঠেছে দেশের তৃতীয় বিরল উদ্ভিদ উদ্যান—যেখানে সংরক্ষিত রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় ৭৬ প্রজাতির উদ্ভিদ। এবার এই উদ্যানে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ‘ফরেস্ট মিউজিয়াম’। এটি গবেষণা, শিক্ষা ও পর্যটনে নতুন দিগন্ত খুলবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

    কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ১৭ একর জায়গাজুড়ে ২০১৫ সালে শুরু হয়ে ২০২০ সালের শুরুতে উদ্যানটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। একই বছরের ৭ নভেম্বর এটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। উদ্যানের প্রায় ৯০ শতাংশ উদ্ভিদই বিলুপ্তপ্রায় বা বিপন্ন প্রজাতির।

    বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার মিরপুর ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পর এটি দেশের তৃতীয় বিরল উদ্ভিদ উদ্যান। তবে যথাযথ প্রচার ও পরিচর্যার অভাবে এর গুরুত্ব এখনও অনেকের অজানা।

    কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি এবং গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই উদ্যানটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে দেশের প্রথম ‘ফরেস্ট মিউজিয়াম’ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

    তিনি আরও বলেন, এই উদ্যানের সংরক্ষিত ৯০ শতাংশ উদ্ভিদই বিলুপ্তপ্রায়। গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উদ্যানটিকে জাতীয় মানের উদ্ভিদ উদ্যান হিসেবে গড়ে তুলতে একটি মাস্টারপ্ল্যান পাঠানো হয়েছিল, যা এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়।

    উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, ইট বিছানো আঁকাবাঁকা পথে হাঁটলেই চোখে পড়ে নানা প্রজাতির বৃক্ষ—যাদের অনেকগুলো এখন গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে গেছে। প্রতিটি গাছের পাশে রয়েছে নাম, বৈজ্ঞানিক পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যসহ তথ্যফলক।

    বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, লালমাই উদ্ভিদ উদ্যানটি প্রকৃতি, গবেষণা, শিক্ষা ও পর্যটনের সমন্বয়ে একটি জীববৈচিত্র্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে। এখানে বিরল ৭৬ প্রজাতির গাছ সংরক্ষিত রয়েছে।

    উদ্যানের উল্লেখযোগ্য গাছের মধ্যে আছে রাধাচূড়া, নাগেশ্বর, আগার, নাগলিঙ্গম, কাঞ্চন, অশ্বত্থ, চন্দন, রক্তচন্দন, চালমুগরা, ধূপ, অর্জুন, মহুয়া, তেলশুর, বহেরা, হরীতকী, কনক, অশোক, পিতরাজ, সোনালু, পারুল, জারুল, চম্পা, টগর, লটকন, করমচা, বন পেয়ারা, বট ও কৃষ্ণচূড়াসহ শতাধিক উদ্ভিদ প্রজাতি।

    এছাড়া রয়েছে ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস, ঔষধি গাছের কর্নার, বিরল উদ্ভিদের বিশেষ বাগান, জলাশয় ও তৃণভূমি—যা পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

    উদ্যানে ঘুরতে আসা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুস সালাম বলেন, এখানে যেসব গাছ আছে, সেগুলো গ্রামে আর দেখা যায় না। নতুন প্রজন্মের জন্য এটি এক জীবন্ত পাঠশালা।

    কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিসা তাবাসসুম মীম বলেন, এই উদ্যানে শিক্ষা সফর বা গবেষণার জন্য দারুণ সুযোগ রয়েছে। শিশুদের প্রকৃতি ও উদ্ভিদ সম্পর্কে জানাতে এটি আদর্শ স্থান হতে পারে।

    লাভ ফর ট্যুরিজম বাংলাদেশ-এর সভাপতি মীর মফিজুল ইসলাম বলেন, দেশের বিপন্ন উদ্ভিদ সংরক্ষণে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। গবেষণা ও পর্যটন—দুই দিকেই কুমিল্লাকে সমৃদ্ধ করবে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান।

    উদ্যান প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশমূল্য সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ২০ টাকা, শিক্ষার্থী ও শিশুদের জন্য ৫ টাকা এবং বিদেশিদের জন্য ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

    সবুজ পাহাড়ের বুকজুড়ে এই উদ্ভিদ উদ্যান শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের নয়, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের কাছেও হয়ে উঠছে নতুন অনুপ্রেরণার উৎস।

    বিআলো/এফএইচএস

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930