“লাশ কাটা ছেড়ার ভয়ে মামলা করিনি : হৃদয়ের স্ত্রী”
ইবনে ফরহাদ তুরাগঃ বোনের বাসায় বেড়াতে এসে প্রাণ গেলো যুবকের। গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৫ টায় রাজধানীর রায়েরবাগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় কদমতলী থানার নিকটে মদিনাবাগ আবাসিক এলাকায় পুলিশের গুলিতে প্রান হারান শাটার মিস্ত্রি হৃদয় (২৬)।
হৃদয়ের বড় বোন সুরমা আক্তার বলেন, আমাদের দুই বোনের একমাত্র ভাই হৃদয়। “সেদিন বাচ্চার জন্য ঔষুধ আনতে গিয়েছিলো”। ৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিলো ওদের। কাজলা এলাকায় দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতো। সেদিন বেরাতে এসেছিলো রইসনগর আমার বাসায়। মা’কে কোনোভাবে মানাতে পারছি না। গুলি ওর বুকের ডান পিছে লেগে সামনে দিয়ে বের হয়েছে।
সুরমা বলেন, আমরা সন্ধ্যা ৭:৩০ এ খবর পাই, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এলাকার কিছু লোকজন তাকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যায়, সেখান থেকেই ফোন আসে হৃদয়ের লাশ নিয়ে আসতে। আমরা ওর লাশ নিয়ে আসি। “আমার ভাই মারা যাওয়ার আগে মোবাইল নাম্বার বলেছিলো বলেই হয়তো লাশটা পেয়েছি”। তার দুই ছেলে (সাড়ে চার বছর আরেকজন সাড়ে ৩ মাস) এতিম হয়ে গেলো।
হৃদয়ের স্ত্রী জানান, “কাটা ছেড়ার ভয়ে মামলা করিনি”। লাশ মেডিকেল থেকে নিয়ে এসেছি। এরপর শনিবার (২০ জুলাই) সকালে মাতুয়াইল কবরস্থানে তাকে দাফন করি। নিহত হৃদয়ের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা, দাউদকান্দি।
প্রসঙ্গত, সেদিন কদমতলী থানাধীন রায়েরবাগ আবাসিক এলাকায় কোটাবিরোধীর সাথে পুলিশ ও স্থানীয় নেতাকর্মিদের ব্যাপক সংঘর্ষ চলছিলো। এদিন কদমতলী থানা ঘেরাও করতে মরিয়া হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা। অপরদিকে কোটাবিরোধীদের নৈরাজ্য মোকাবেলায় এলাকা দখল করতে পুলিশ ছিলো মাঠে উত্তপ্ত। সেদিন বিকেল ৫টায় মদিনাবাগ আবাসিক এলাকায় বিচ্ছিন্ন ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় হৃদয়।
তবে এই ঘটনায়, শাটার মিস্ত্রি হৃদয় নিহত হওয়ার কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই বলে নিশ্চিত করেন কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম।
বিআলো/নিউজ