শান্তিরক্ষীদের ঘাঁটির গেট ভেঙে ঢুকেছে ইসরায়েলের ট্যাংক: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক নীতিমালা লঙ্ঘনের আরেক খবর সামনে এসেছে। জাতিসংঘ রোববার বলেছে, দক্ষিণ লেবাননে শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটির গেট ভেঙে ইসরায়েলের ট্যাংক হানা দিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইউনিফিল শান্তিরক্ষী বাহিনীর সেনাদেরকে দক্ষিণ লেবাননের লড়াইক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে আহ্বান জানানোর কয়েকঘণ্টা পরই ইসরায়েলের এই ট্যাংক হানার খবর জানায় শান্তিরক্ষীরা।
এর আগে লেবাননে দফায় দফায় বিমান হামলায় ৫ জন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী আহত হয়েছে। এইসব হামলার বেশিরভাগই ইসরায়েল চালিয়েছে বলেই জানিয়েছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা। শান্তিরক্ষীদের অবস্থানগুলোতেই এসব হামলা হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে উদ্দেশ্য করে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ বারবার শান্তিরক্ষীদেরকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বললেও তারা বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এই বাহিনী হিজবুল্লাহর জন্য মানব ঢাল হিসাবে কাজ করছে বলে নেতানিয়াহু অভিযোগ করেন। তবে হিজবুল্লাহ এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
দক্ষিণ লেবানন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার জন্য ১৯৭৮ সালে গঠন করা হয় ইউনিফিল শান্তিরক্ষী বাহিনী। তারপর থেকে ওই এলাকায় সংঘাত চলেই আসছে।
১৯৮২ সালে ইসরায়েল সেখানে আগ্রাসন চালিয়েছে। ২০০০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ লেবানন দখল করে রাখে তারা। এরপর আবার ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পাঁচ সপ্তাহ ব্যাপী বড় ধরনের লড়াই চালায় ইসরায়েল।
আর গত তিন সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল লেবাননে যে হামলা শুরু করেছে তা কয়েক দশকের মধ্যে অনেক বেশি প্রাণঘাতী।
ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউনিফিল শান্তিরক্ষী বাহিনী ২০০৬ সালের যুদ্ধর পর পাস হওয়া জাতিসংঘ প্রস্তাবনা ১৭০১ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই প্রস্তাবনার আওতায় দক্ষিণ লেবানন সীমান্ত অস্ত্র ও সেনামুক্ত রাখতে বলা হয়েছিল।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রধান জ্য পিয়ারে ল্যাক্রোইক্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ভেঙে পড়েছে। তারা নিজ নিজ অবস্থানে থাকলেও তাদের কাজ ২৩ সেপ্টেম্বর থেকেই থমকে গেছে।
শান্তিরক্ষীরা ঘাঁটিতেই থাকে। ৩০০ শান্তিরক্ষীকে সম্প্রতি সাময়িকভাবে বড় ঘাঁটিগুলোতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জাতিসংঘের কয়েকটি সূত্র বলেছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের বিষয়টিতে শান্তিরক্ষীদের নজর রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছে।
বিআলো/শিলি